জন্মভূমি ডেস্ক : দেশজুড়ে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর আওতায় গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানায় ৪০জন ও মহানগরের ৮টি থানায় ৪২জনসহ মোট ৮২ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে গাজীপুর জেলা ও মহানগর পুলিশ।
তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাতভর এই অপারেশন পরিচালনা করে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় এখনও অভিযান চলমান রয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের ৮টি থানায় মোট ৪২ জনের মধ্যে, পূবাইল থানায় ২জন, মেট্রো সদর থানায় ১৬জন, বাসন থানায় ৭ জন, টঙ্গী পূর্ব থানায় ৭ জন, গাছা থানায় ৫ জন, কোনাবাড়ি থানায় ২ জন ও কাশিমপুর থানায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান জানান, গাজীপুর মহানগর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। এই অভিযান চলমান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন আওয়ামী লীগ-যুব লীগের নেতাকর্মীরা। এতে আহত হন অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের নেতাকর্মীরা বলেন, হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাইকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলায় আহতদের দেখতে গতকাল রাত তিনটার দিকে হাসপাতালটিতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দুই নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবি, গতকাল রাতে কাছে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হয়। দ্রুত ১৫ থেকে ২০ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে লুটপাট হচ্ছে। এ সময় আওয়ামী লীগ-যুব লীগের নেতাকর্মীরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষকে জড়ো করা হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বাসার ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও পেটায় তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মাহিম জানান, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ধীরাশ্রমের বাড়িতে লুটপাট হচ্ছে, এমন খবরে লুটপাট ঠেকাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
তবে গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আ ক ম মোজাম্মেল, রাসেল, জাহাঙ্গীরসহ সকলকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। সেই ঘটনার পরপরই সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণা করে সরকার।