আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলায় এবছর রেকর্ড পরিমাণ জমাতে বোরো আবাদ, সবজী, সরিষা, আলু ও অন্যান্য চাষাবাদ হচ্ছে। আবাদ বাড়লেও সেচ মেশিন মালিকদের দৌরাত্ম্যে লাভের মুখ দেখতে হিমশিম খাচ্ছে।
আশাশুনি উপজেলার বড় অংশে মাছ চাষ হয়ে আসছে। লোনা পানির মাছ চাষের পাশাপাশা মিষ্টি পানির মাছ চাষে চাষীদের আগ্রহ ও অংশ গ্রহন দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। একই সাথে কৃষি বিভাগের পরামর্শ্ব ও সহযোগিতা পেয়ে উপজেলার একটি বড় অংশ জুড়ে মিষ্টি পানির মাছ চাষের সাথে সাথে একই জমিতে ধান, শাক-সবজী চাষের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এতে সংসারের প্রয়োজনীয় চালের চাহিদা পুরনের সাথে সাথে একই জমিতে মাছ, ধান ও সবজী চাষের প্রেক্ষিতে আশানুরুপ লাভবান হচ্ছে।
কিন্তু সেচ চালিত ও ডিজেল চালিত স্যালো/সেচ মেশিনের পানিতে বোরো আবাদ করতে গিয়ে চাষীদের থেকে মালিকরা টাকার পরিবর্তে উৎপাদিত ফসলের সিকি ভাগ আদায় করায় বিপাকে রয়েছেন চাষীরা।
এবছর আশাশুনি উপজেলায় ৪ হাজার ৮ শত ৫১ জন কৃষক বোরো আবাদ করছেন। বোরো আবাদি জমির পরিমাণ ৯ হাজার ৩৪ড় হেক্টর। বিদ্যুৎ চালিত মটর রয়েছে ১৩৫ টি। এসব মটরে সরকারি ভর্তূকি সুবিধা থাকলেও মেশিন মালিকরা কৃষকদের থেকে খরচের অতিরিক্ত খরচ আদায় করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিজিল চালিত মেশিনে পানি সরবরাহ খরচ বিদ্যুৎ চালিত মেশিনের তুলনায় অনেক বেশী। অথচ উপজেলার মেশিনে পানি দেওয়া বাবদ টাকা না নিয়ে চাষের আওতায় থাকা জমির বিচালী ও ধান সিকি ভাগ নেওয়া হয়ে থাকে। একজন চাষী চাষাবাদের সকল খরচ মিটিয়ে ধান কাটার পর ধান ও বিচালীর সিকি ভাগ আদায় করে নিয়ে থাকে। জমি বাবদ সিকি ভাগ ও সেচ খরচ বাবদ সিকি ভাগ ছেড়ে দিয়ে চাষী অর্ধেক ভাগ নিয়ে ব্যয় তুলতে হিমশিম খাচ্ছে। বরং নিজের মজুরি যোগ করলে দেখা যায় চাষী ধান আবাদ করে অনেক ক্ষেত্রে লোকশান নিয়ে বাড়ি ফিরছে।
বুধহাটা বোরো ধান চাষী আনিছুর রহমান জানান, আমার কোন মেশিন নেই, বোর নেই জমিও নেই। অন্যের জমি ভাগে নিয়ে চাষ করে থাকি। মালিককে সিকি ভাগ, মেশিন ও বোর মালিককে সিকি ভাগ দিয়ে যে ফসল পাই তাতে খরচ ওঠেনা। নিজে খেটে একবারে অনেক ধান ও বিচালী পেয়ে মন ভরে যায়, অনেকদিন চাল ক্রয়ের চিন্তা থাকেনা বলেই কষ্ট করে চাষাবাদ করে থাকি। সার, কীটনাশকের মূল্য বেশী, তার উপর অর্ধেক ধান ও বিচালী মালিক ও মেশিনের ভাগ দেওয়া কতটা কষ্টের তা বলে বুঝানো যাবেনা বলে তিনি হাপিত্যিশ করে ওঠেন।
এব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, উৎপাদিত ফসলের সিকি ও বিচালীর সিকি ভাগ সেচ বাবদ কেটে নেওয়া অমানবিক। চাষীরা বলতে গেলে বাধ্য হয়ে এহেন হিচ্ছা মেনে নিয়ে আসছে। কৃষক না বাঁচলে চাষাবাদ কমে আসবে।
বিএডিসি এর সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) ইবনে সিনা জানান, আশাশুনি উপজেলায় বিদ্যুৎ চালিত সেচে বোরো আবাদ আ
অনেক আগে থেকে চলছে। আমি আসার পর ২০২০ সাল থেকে ৫২ জন নতুন লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়ে সেচ দিয়ে আসছে। যারা সরকারি ভর্তূকি মূল্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন। সাতক্ষীরা জেলার কোন উপজেলায় সিকি ভাগের বিনিময়ে পানি দেওয়া হয়না। কেবলমাত্র আশাশুনি উপজেলায় এ কাজটি হয়ে থাকে। বিদ্যুত ও পানি দিতে সকল খরচসহ ১৮০০ টাকা শেকে সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা বিঘা প্রতি খরচ নেওয়া সংগত। তিনি বলেন, এই অনাচার থেকে রক্ষা পেতে সকল চাষীদের এক হতে হবে। তারা পানির খরচ বাবদ টাকা দেবে এমন সিদ্ধান্তে একমত হলে আমরাও তাদের সহযোগিতা করতে পারবো।
আশাশুনির বোরো চাষীদের উপর মেশিন মালিকদের জুলুম
Leave a comment