জন্মভূমি ডেস্ক : পাঁচদিন দেশে ইন্টারনেট সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি অকার্যকর ছিল। মঙ্গলবার রাত থেকে ব্রডব্যান্ড সরবরাহ শুরু হলেও তা সীমিত আকারে। চালু করা যায়নি মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। ইন্টারনেট সরবরাহে ব্যাঘাত নিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মিডিয়া উইং থেকে গত শনিবার এসএমএস দিয়ে জানানো হয়, রাজধানীর মহাখালীতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ডাটা সেন্টার ও সঞ্চালন লাইন পুনঃসংযোগের কাজ চলমান রয়েছে, যা মেরামত করতে আরো সময় লাগবে।
প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের কোনো একটি-দুটি ভবনে বা একটি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও সারা দেশে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নেটওয়ার্ক সিস্টেম মূলত বিভিন্ন মডিউলে কাজ করে। এর মধ্যে রিং টপোলজি, স্টার টপোলজি, হাব অ্যান্ড স্পোক টপোলজির মতো অনেকগুলো মডিউল রয়েছে। এসব মডিউলের একটি সংযোগ বন্ধ হয়ে গেলে অন্য সংযোগগুলো চলমান থাকে। যার কারণে একটি ভবন বা এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও শুধু ওই ভবন বা এলাকায় সমস্যা তৈরি হবে। পার্শ্ববর্তী অন্য সংযোগগুলো চলমান থাকবে।
ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার দেশের ইন্টারনেট সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। মোবাইল ইন্টারনেট সেবা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের (সরকার) ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ‘সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’
অপারেটররা সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার কথা বললেও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্নের কথা উল্লেখ করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেলিকম অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য দিতেও রাজি হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট কয়েক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অপারেটরদের ইন্টারনেট সরবরাহে অবকাঠামোগত সমস্যা নেই।
বৈশ্বিক ইন্টারনেট ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে সংযুক্ত করার কাজটি সম্পাদন হয় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ও ছয় ইন্টারন্যাশনাল টিরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) কোম্পানির মাধ্যমে। এর মধ্যে বিএসসিসিএল আনে ৫০ শতাংশ। বাকি ৫০ শতাংশ আনে ছয় আইটিসি অপারেটর। এসব কোম্পানির মাধ্যমে আমদানীকৃত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ দেশের অভ্যন্তরে সরবরাহ ব্যবস্থাপনার কাজটি সম্পন্ন হয় তাদের গ্রাহক অপারেটরদের মাধ্যমে। এসব অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো কাজের ধরন অনুযায়ী ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়েজ (আইজিডব্লিউ), টেলিকম অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) নামে পরিচিত।
বিএসসিসিএল সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটির গ্রাহক হিসেবে রয়েছে মোট ১৮৪টি নেটওয়ার্ক অপারেটর কোম্পানি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রাহক সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড, আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড, বিডি হাব লিমিটেড, বিটিসিএল, আর্থ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড, ফাইবার অ্যাট হোম, আই-টেল লিমিটেড, লেভেল থ্রি ক্যারিয়ার লিমিটেড, ম্যাক্স হাব লিমিটেড, অপটিম্যাক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড, পিয়ারেক্স নেটওয়ার্ক, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। বড় অপারেটরদের মধ্যে ঢাকা কলো, কলেসিটি, এনআরবির অফিস মহাখালী এলাকায় রয়েছে। এছাড়া আরো কিছু অপারেটরের কার্যালয় ও ডাটা সেন্টার এ এলাকায় অবস্থিত। আর বিএসসিসিএলের অফিস তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডে অবস্থিত।
এসব অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশেরই কার্যালয় ও ডাটা সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে রাজধানীর গুলশান, তেজগাঁও, বনানী ও কারওয়ান বাজার এলাকায়। কিছু কোম্পানি তাদের ডাটা সেন্টার ঢাকার বাইরে গাজীপুর, যশোর এলাকায় স্থাপন করেছে। এছাড়া টেলিকম অপারেটররা একই অপটিক্যাল ফাইবার কেবল ব্যবহার করে টুজি ও ফোরজি সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে গত কয়দিন টুজি (টেলিকম অপারেটরদের সাধারণ ভয়েস ও এসএমএস সেবা) সেবা অব্যাহত ছিল।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকেও সম্প্রতি দাবি করা হয়, মহাখালীতে অগ্নিসংযোগের ফলে ডাটা সেন্টার ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সারা দেশে ইন্টারনেট সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ব্যাঘাত ঘটেছে। খাজা টাওয়ার এবং পার্শ্ববর্তী ভবনকেন্দ্রিক এসব ট্রান্সমিশন ও ডাটা সেন্টারের অবস্থান বলে বিভিন্ন অংশীজনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। যদিও প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, শুধু মহাখালী এলাকায় অগ্নিসংযোগে ট্রান্সমিশন কেবল ও ডাটা সেন্টার পুড়ে যাওয়ায় দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি অবিশ্বাস্য ঘটনা।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, ‘বর্তমানে যেসব অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হয়, এসব কেবলের বড় অংশ রেলওয়ে, পিজিসিবি ও গ্রামীণফোন স্থাপন করেছিল। এ শতকের শুরু থেকে স্থাপন শুরু করা এসব কেবলের বড় অংশ জিএসএম প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। টুজি সেবা যে ট্রান্সমিশন কেবলের মাধ্যমে দেয়া হয়, সেই একই কেবলের মাধ্যমে ফোরজি সেবাও দেয়া হয়। ফলে সরকার টুজি সেবা চালু রেখে ফোরজি বন্ধ করে দেয়ার অর্থ ট্রান্সমিশন কেবলে সমস্যা নয়, সমস্যা অন্য কোথাও।’
মহাখালী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম) ভবনের সামনে ওভারহেড ট্রান্সমিশন কেবল পোড়া অবস্থায় রয়েছে। এসব ট্রান্সমিশন কেবলের মধ্যে আইআইজি, আইটিসি, এনটিটিএন, আইএসপিসহ ইন্টারনেট সরবরাহকারী অপারেটরদের কেবল রয়েছে। অপারেটররা এসব কেবল পুনঃস্থাপনের কাজ করছেন। বহুল আলোচিত খাজা টাওয়ারের এক ভবন পরই ডিডিএম ভবনটির অবস্থান।
এর আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সময় ২৭ অক্টোবর বিকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে মহাখালীর খাজা টাওয়ারে। এরপর প্রথম আলোচনায় আসে ভবনটি। অগ্নিকাণ্ডের পরপরই দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতি শুরু হয়। তখন সরকার ও ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ভবনটিতে আগুন লাগার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রডব্যান্ড ও ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হয়। ভবনটিতে দেশে ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদানকারী অপারেটরদের অনেকগুলো ডাটা সেন্টার ও অফিস রয়েছে বলে তখন দাবি করা হয়।
খাজা টাওয়ারের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় ভবনটিতে বেশকিছু টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠান ছিল। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকগুলো এখান থেকে চলে যায়। এখন নতুন কিছু প্রতিষ্ঠান এসেছে। আরো দুটি ফ্লোর এখন খালি পড়ে রয়েছে। এগুলো ভাড়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ভবনের তিন নিরাপত্তারক্ষী বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এক ভবন পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে। কিন্তু সবাই শুধু খাজা টাওয়ারে এসে খোঁজ নিচ্ছে। অথচ এ ভবনে কোনো কিছুই ঘটেনি। গত কয়েকদিন ধরে ভবনটি বন্ধ রাখা হয়েছে নিরাপত্তার কারণে।
খাজা টাওয়ারের পাশেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ভবনের নিচতলা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নিচতলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সার্ভার পুড়ে গেছে। তবে এ ভবনে কোনো ডাটা সেন্টার ছিল না। ভবনের সামনে ঝুলে থাকা ইন্টারনেট প্রোভাইডার, ডিশ অপারেটরদের অপটিক্যাল ফাইবার কেবল পুড়ে গেছে।
জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো ডাটা সেন্টার নেই। কোনো বেসরকারি কোম্পানিকে আমাদের ভবন ভাড়া দেয়া হয়নি। এখানে কোনো ডাটা সেন্টার ছিল না। কিন্তু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সার্ভারটি আমাদের এখানে ছিল। এখান থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডাটা সংরক্ষিত থাকত। তবে এর ব্যাকআপ আছে কিনা এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। ক্ষতির বিষয়ে জানতে আমরা কমিটি করে দিয়েছি। কমিটির প্রতিবেদনের পর এসব বিষয়ে জানা যাবে।’
এর আগে গত রোববার বিকালে বিটিআরসি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ভেঙে দেয়ার জন্য সরকার, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, আইএসপি অপারেটররা দায়ী নয়, এর জন্য চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা দায়ী। তারা ছাত্র আন্দোলনের বিষয়টিকে জিম্মি করে বেছে বেছে সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করার জন্য এবং উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে ডিজিটাল সাইবার ও ভৌত অবকাঠামোগুলো ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। পুরো ইকোসিস্টেম পুনঃস্থাপন করতে হলে আবার আমাদের সঞ্চালন লাইন ঠিক করা, ডাটা সেন্টার মেরামত করা এবং প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রকৌশলীদের ফিজিক্যালি যেতে হবে। কত দ্রুত আমাদের ইন্টারনেট সংযোগ পুনঃস্থাপন, কত দ্রুত টেলিযোগাযোগ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি।’
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে সক্রিয় ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) লাইসেন্স রয়েছে ৩০টি। এসব প্রতিষ্ঠান ২০২১ সাল থেকে দেশব্যাপী পিওপি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। এসব পিওপি থেকে মূলত আইএসপি অপারেটররা ইন্টারনেট সংযোগ পেয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইডথ ছাড়াও দেশীয় ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (এনআইএক্স) চালু করেছে বিটিআরসি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ ট্রাস্ট, নভোকম নিক্স লিমিটেড, লেভেলথ্রি ক্যারিয়ার, ডিজিকন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড, সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড প্রভৃতি। সাবমেরিন কেবল ও আইটিসি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইডথ বন্ধ হলেও এনআইএক্সের মাধ্যমে দেশীয় ইন্টারনেট সংযোগ চলমান থাকার কথা রয়েছে। এসব কোম্পানিরও কোনো অফিস বা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিটিআরসিতে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ‘ভূগর্ভস্থ কেবল যেখানে পপ-আপের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, সেখানে দুর্বৃত্তরা ইন্টারনেট ও ডিশের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।’
দেশে লাস্ট-লাইন ভূগর্ভস্থ ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে একমাত্র ধানমন্ডি এলাকায়। এর আগে গুলশান, বনানী ও মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় ভূগর্ভস্থ ফাইবার অপটিক্যাল কেবল সংযোগ প্রদান করা হলেও তা একেবারে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসব স্থানে ওভারহেড কেবল সঞ্চালন চলছে। দেশজুড়ে ফাইবার অপটিক্যাল কেবল স্থাপন করেছে এনটিটিএন অপারেটর ফাইবার অ্যাট হোম, সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), বাংলাদেশ রেলওয়ে ও বাহন লিমিটেড। এসব কোম্পানির অধীনে সারা দেশে ১ লাখ ৫ হাজার ৮৭১ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ২২২ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ কেবল, বাকি অংশ ওভারহেড ও সোয়াপিং ফাইবার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনটিটিএন অপারেটরদের স্থাপিত এসব অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের মাধ্যমে পপ-আপ স্থাপন করে আইআইজি, আইজিডব্লিউ, আইটিসি, এনআইএক্স, টেলিকম অপারেটর, আইএসপি অপারেটররা সেবা প্রদান করে। এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় নেটওয়ার্ক বিভ্রাট ঘটলেও দেশজুড়ে এ বিভ্রাটের প্রভাব পড়া একেবারেই অসম্ভব বিষয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আওরঙ্গজীব মো. আব্দুর রাহমান বলেন, ‘আমরা দ্বিধান্বিত। ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার যে ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে, তা আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না।’
একইভাবে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে আরেক প্রযুক্তিবিদ বলেন, ‘ডাটা সেন্টার পুড়ে গেলেও ডাটা সেন্টারের একটি ব্যাকআপ থাকে সবসময়। এ ব্যাকআপকে ডিজাস্টার রিকভারি মডিউল (ডিআরএম) বলা হয়। প্রত্যেকটি ডাটা সেন্টারের এ ব্যাকআপ মডিউল রাখা হয়। আমাদের এখানে ডাটা সেন্টার পুড়ে গেলেও ডিআরএনের মাধ্যমে তা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব ছিল। তাছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ফোর টায়ার ডাটা সেন্টার রয়েছে। জাতীয় এ ডাটা সেন্টারকে ব্যবহার করা হয়নি কেন তা-ও এখন প্রশ্নের বিষয়।