জন্মভূমি ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে র্যাগিংয়ের নামে ছাত্র নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটি। ইতিমধ্যে জমা দেওয়া প্রশাসনের তদন্ত কমিটি র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনে সম্পৃক্ত তিনজন ছাত্রকে শনাক্ত করেছে। কমিটি তাদের মধ্যে দুজনের সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করেছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি লালন শাহ হলের গণরুমে রাতভর আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিং দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দুটি তদন্ত কমিটিই প্রতিবেদনে র্যাগিংয়ের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিধি অনুযায়ী তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা কম থাকায় তাঁকে সতর্ক করতে সুপারিশ করেছে কমিটি।
ওই ঘটনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মোহাম্মদ সাগরের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে ইতিহাস বিভাগের উজ্জ্বল হোসেনের সংশ্লিষ্টতা কম পেয়েছে কমিটি। তাঁরা তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘তদন্তে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। জড়িতদের বিষয়ে প্রশাসন বরাবর বিধি অনুযায়ী শাস্তির সুপারিশ করেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়েছে। এরপর পরবর্তী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতভর ইবির লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষ তথা গণরুমে এক শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিং দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে বলা হয়, ওই শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে রড দিয়ে মারধর করা। এ সময় তাঁকে পর্নোগ্রাফি দেখানোসহ টেবিলের ওপর কাকতাড়ুয়া বানিয়ে রাখা হয়। তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালও করা হয়। তা ছাড়া নাকে খত দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।