জন্মভূমি রিপোর্ট : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুলনা মহানগরীর উন্নয়নে ৪৯১ কোটি ২৮ লাখ ৬১ হাজার টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাব মোকাবিলায় খুলনা শহর এলাকার উন্নয়ন (ফেজ-২)’ শীর্ষক এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প ব্যয়ের ৩৬% শতাংশ (১৭৮ কোটি ৪৬ হাজার টাকা) সরকার (জিওবি), ৬৩% শতাংশ (৩১২ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা) জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (কেএফডব্লিউ) এবং ১ কোটি টাকা কেসিসির নিজস্ব তহবিল হতে ব্যয় করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয়েছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৭ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন এবং শহরমুখী ক্রমবর্ধমান জলবায়ু উদ্বাস্তুদের নাগরিক সেবা প্রদান, সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়।
নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়ায় সিটি মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে তিনি শেখ হাসিনা) সব সময় আন্তরিক। ইতোপূর্বেও তিনি খুলনা মহানগরীর উন্নয়নে ৩ টি প্রকল্পের অনুকূলে প্রায় ১ হাজার ৯শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ মহানুভবতা খুলনাবাসী চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
প্রকল্পের আওতায় নগরীর সোনাডাঙ্গা বাইপাস রোড ও ড্রেন উন্নয়ন, নবীনগর সাব-ক্যাচমেট ড্রেন উন্নয়ন, নিরালা খাল, বাস্তুহারা খাল ও দেয়ানা চৌধুরী খাল উন্নয়ন এবং বাস্তুহারা খালের সঙ্গে সংযুক্ত ড্রেনগুলোর উন্নয়ন, রূপসা রিভার ফ্রন্ট পার্ক নির্মাণ, মহানগরীর ২৩টি পুকুর উন্নয়ন, দৌলতপুর ও মহেশ্বরপাশায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মহেশ্বরপাশা শ্মশানঘাট উন্নয়ন, আলুতলা আউটলেট উন্নয়ন, লবনচরায় পাম্পিং স্টেশন ও আউটলেট গেট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার শ্রীমাই নদীতে মাল্টিপারপাস হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম নির্মাণ’ প্রকল্প; ‘বরিশাল জেলার কারখান, বিঘাই এবং পায়রা নদীর ভাঙন হতে শেখ হাসিনা সেনানিবাস এলাকা রক্ষা (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প এবং ‘ঢাকা জেলার দোহার উপজেলাধীন মাজিরচর থেকে নারিশাবাজার হয়ে মুকসুদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী ড্রেজিং ও বাম তীর সংরক্ষণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় ছোট দ্বীপ এবং নদীর চরের জন্য অভিযোজন উদ্যোগ’ প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ (সওজ অংশ) (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং ‘কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা সদর হতে করিমগঞ্জ উপজেলার মচিখালি পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘ইস্টাব্লিশমেন্ট অব গ্লোবাল মেরিটাইম ডিসট্রেস এবং সেইফটি সিস্টেম এবং ইন্টিগ্রেটেড ম্যারিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম-ইজিআইএনএস (তৃতীয় সংশোধিত’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘বাংলাদেশের ২৫টি শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন (জিওবি-এআইআইবি)’ প্রকল্প এবং ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট পেজ-২, খুলনা প্রকল্প; বিদ্যুৎ বিভাগের ‘ঘোড়াশাল ৪র্থ ইউনিট রি-পাওয়ারিং (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।