শেখ আব্দুল হামিদ : আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ওরা আর কোনদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। পদ্মার এপারে বিএনপি-জামায়াতকে আর রাজপথে নামতে দেওয়া হবে না। ওরা আর কোনো দিনই ক্ষমতায় আসবে না। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা, গুণ্ডারা যদি জনগণের শরীরে আগুন দেয়, সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা শীববাড়ী চত্বরে মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি ।
বিএনপির তীব্র সমালোচনা করে শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের আগে বিএনপি আল্টিমেটাম দিয়েছিল, ১১ ডিসেম্বর নাকি তারেক জিয়া এদেশে চলে আসবে, কই সে তারেক চোর কই? কই সে কই?’
শেখ হেলাল উদ্দিন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করি। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে বিশ^াস করি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সততার নেত্রী, সাহসিকতার নেত্রী, তিনি সততার উদাহরণ। পদ্মা ব্রিজ থেকে শুরু করে কত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে তিনি দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন। যুবলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, যুবলীগের নেতাকর্মীরা একটি পরিবারের সদস্য। এই পরিবারের সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো যড়যন্ত্রেই কাজ হবে না।
এর আগে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত খুলনা জেলা ও মহানগর যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এসময় তিনি বলেন, বিএনপি প্রোপাগান্ডার রাজনীতি করে। তারা সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকতে চায়। সত্য দিয়ে তাদেরকে পরাজিত করতে হবে। অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক পন্থা আপনাদের পছন্দ। এই প্রজন্ম আপনাদেরকে বিশ্বাস করে না। বিভ্রান্তি আর প্রোপাগান্ডার রাজনীতি করে লাভ হবে না। রাজনীতির গুণগতমানে ধ্যান দেন। ক্ষমতার লোভে অপরাজনীতি বন্ধ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত এন্টি আওয়ামী লীগের সেন্টিমেন্টের উপর ভর করে এ দেশের সহজ, সরল সাধারণ মানুষের সুযোগ নিতে অত্যন্ত পারদর্শী। ভিন্ন মতামত ও মতাদর্শ গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সবাই আওয়ামী লীগকে সমর্থন করবে-এমন কোনো কথা নাই। ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু সেই ভিন্ন মতাদর্শ যদি বাংলাদেশ বিরোধী মতাদর্শ হয়, তাহলে আমাদের ঘোর আপত্তি আছে। সেই গোষ্ঠী যদি এ দেশের সাধারণ জনগণের ওপর একাত্তরে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আক্রমণ করে তাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা ঘরে বসে থাকতে পারি ন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মর্যাদাপূর্ণ স্থানে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অর্জনসমূহকে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পুনরায় শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করতে হবে। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন খান নিখিল।
খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক কামরুজ্জামান জামালের সভাপতিত্বে ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনের পরিচালনা সম্মেলনে বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, শেখ হেলালউদ্দিনের পুত্র শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক এমডিএ বাবুল রানা, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি, আব্দুস সালাম মূর্শেদী এমপি, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোদ্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ প্রমুখ। সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় নগরীর ইউনাইটেড ক্লাবে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিলর অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।