তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের ঘোষনগর কপোতাক্ষের চরভরাটি জমিতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাাণাধীন মুজিব কেল্লা (প্রস্তাবিত দূর্যোগ সহনীয় আশ্রয় কেন্দ্র) নির্মাণের শুরুতেই নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প উদ্বোধনের অন্তত ৯ মাস পর বালুভরাট করে কাজের ৩০ শতাংশ অগ্রগতি দেখিয়ে প্রথম বিল বাবদ ৩৭,৭১,৪৩১ টাকা ও পরে নিম্নমানের সামগ্রীতে শুধুমাত্র বেজ ঢালাই দিয়ে কাজের ৪০ শতাংশ অগ্রগতি দেখিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা ৩৮,৪৩,৭৫৮ টাকা বিল প্রস্তুতপূর্বক অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে তা প্রকল্প পরিচালক বরাবর প্রদানের সুপারিশ করেন।
সূত্র জানায়, গত ২৭/২/২৫ তারিখে তালা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেন ও মুজিব কেল্লা নির্মাণ সংস্থা ও প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রথম বিলে ৩০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি বাবদ ৩৭ লক্ষ একাত্তর হাজার চার শত একত্রিশ টাকা ও গত ২৪/৩/২৫ তারিখে দ্বিতীয় বিল ৪০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি বাবদ অর্থাৎ প্রথম বিল থেকে দ্বিতীয় বিল পর্যন্ত মাত্র ১০ শতাংশ কাজ করে আটত্রিশ লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার সাত শত আটান্ন টাকা সর্বমোট ছিয়াত্তর লক্ষ পনেরো হাজার একশত উননব্বই টাকা বিল প্রদানের সুপারিশ করেন।
জানাযায়, মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংষ্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর এক উন্মুক্ত দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে খলিলনগর ইউনিয়নের ঘোষনগর খোকন মন্ডলের বাড়ির পাশে কপোতাক্ষের চরভরাটি ওয়াপদা বাঁধের উপর ১ একর জমির উপর ৮ হাজার স্কয়ার ফুটের উপর মুজিব কিল্লা নির্মাণ প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায় কুষ্টিয়ার ঠিকাদার মোঃ সরোয়ার হোসেন। যার প্যাকেজ নং- ডিডিএম/এমকেপি/আরবিএন-২১৯। কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ২০২৪ সালের ৮ জুলাই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ঐ দিন দুপুর ১২টায় উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আব্দুল্লাহ আল-আমিন।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, সঠিক নিয়মে উন্নত নির্মাণ সামগ্রীতে বাস্তবায়ন হচ্ছে মুজিব কেল্লাটি।
উপসহকারী প্রকৌশলী মুজিব কেল্লা নির্মাণ সংস্থা ও প্রজেক্ট সাতক্ষীরার মোঃ আতিকুর রহমান জানান, কোন অনিয়ম ছাড়াই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এছাড়া মুজিব কেল্লা নাম পরিবর্তন কনে দূর্যোগ সহনীয় আশ্রয় কেন্দ্র নাম করণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ ভিম ঢালাইয়ের পর পুতা (ভিম ঢালাইয়ের) উপর গাঁথনিতে স্থানীয় পাল বাড়ি (টালী কারখানার) ইট ব্যবহার হচ্ছে।
এদিকে ভাটার পিকেট ইটের খোঁয়ার পরিবর্তে টালী কারখানার নিম্নমানের উচ্ছিষ্ট খোঁয়া ও ইট ব্যবহারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, পিকেট ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে, সেখানে ভাটা কিংবা টালী কারখানার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
কপোতাক্ষের চরভরাটি জমিতে মুজিব কেল্লা নির্মাণের শুরুতেই নানা অসংগতি!

Leave a comment