
ডেস্ক রিপোর্ট : সাগরে সৃষ্ট গভীর নিন্মচাপের প্রভাবে কেশবপুরে গত দুই সপ্তাহ ধরে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিাপাত হচ্ছে। কিন্তু বর্ষার অতিরিক্ত পানি কেশবপুরের সীমান্তবর্তী কাশিমপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্রসবাঁধে নিষ্কাশনে বাধা পেয়ে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ পৌর এলাকার মানুষের বসতবাড়িতে উঠে গেছে। এঅবস্থায় ভূক্তভোগীরা দীর্ঘদিন ধরে কেশবপুরবাসীর মরনফাঁদ খ্যাত কাশিমপুরের ক্রসবাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা কর্ণপাত করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভদ্রানদীর মুখের ওই ক্রসবাঁধ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়।
জানা গেছে, পলির হাত থেকে এ উপজেলার বুড়িভদ্রা, হরিহর ও আপারভদ্রা নদী রক্ষায় ১৯৯৬ সালের পর থেকে শ্রী নদীর সংযোগস্থল কাশিমপুরে ভদ্রা নদীর মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ক্রসবাঁধ দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়। প্রতিবছর শুষ্ক মোওসুমে (ডিসেম্বর) ওই স্থানে ক্রসবাঁধ দেয়া হতো এবং বর্ষা মোওসুমের আগেই (জুন) তা অপসারণ করা হতো। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাশিমপুরে বাঁধ নির্মাণ ও অপসারণে ২২ লাখ টাকা বারাদ্দ দেয়া হয়। গেল শুষ্ক মোওসুমে ওই স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার ক্রসবাঁধ দিলেও বর্ষা মোওসুমের জুলাই মাসের অর্ধেক হতে চললেও তা অপসারণে উদ্যোগ নেয়নি পাউবো। এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিন্মচাপের প্রভাবে কেশবপুরে গত দুই সপ্তাহ ধরে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিাপাত হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি আপারভদ্রা নদী দিয়ে শ্রী নদীতে নিষ্কাশনে ব্যর্থ হয়ে নিন্মাঞ্চল প্লাবিতসহ নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। পানিতে পৌর শহরের বালিয়াডাঙ্গা এলাকার কেশবপুর পাঁজিয়া সড়ক, পৌরসভার আলতাপোল ৫নং ওয়ার্ড, মধ্যকুল ও সাহাপাড়া তলিয়ে যায়। বিষয়টি ভূক্তভোগীরা উপজেলা প্রশাসনকে জানালে অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে ভদ্রা নদীর মুখে কাশিমপুরের ক্রসবাঁধ অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার ঠিকাদার কাশিমপুরের ক্রসবাঁধটি অবশেষে অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কেশবপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, পলির হাত থেকে নদী রক্ষায় প্রতিবছর ডিসেম্বরে ওই স্থানে বাঁধ দেয়া হয় এবং জুনে তা অপসারণ করা হয়। এরজন্যে ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এবছর বৃষ্টি মোওসুম আগে ভাগেই শুরু হয় এবং গত সাত দিনে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর প্রভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিসহ কিছু কিছু লোকালয়ে পানি উঠেছে। তাছাড়া, বুড়িভদ্রা নদী ও নুরানীয়া খালের পলি অপসারণ কাজ চলছে। যে কারণে বাঁধটি অপসারণ করা হয়নি। পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদারের লোকজন বৃহস্পতিবার থেকে অপসারণে কাজ করছে। দু’দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।