শেষ মুহূর্তে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে প্রার্থীরা
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন আজ। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ছুটছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আজ শনিবার মধ্যরাতে শেষ হবে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা।
কেসিসি নির্বাচনে এবার পাঁচজন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সদ্য সাবেক মেয়র তালুদকার আব্দুল খালেক, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু, জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান।
॥ আজ মধ্যরাত থেকে নগরীতে মোটরসাইকেল চলবে না ॥
কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষে আজ শনিবার রাত ১২টা থেকে আগামী ১৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত মহানগরী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেও পৃথক গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের পরিবেশ নির্বিঘ্ন করতে ১০ জুন দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত মহানগরী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল করবে না। এছাড়া ১১ জুন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা নগরীতে ট্রাক, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জীপ, পিকআপ, কার ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধ থাকবে।
॥ চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা ॥
নির্বাচনকে সামনে রেখে শুক্রবার শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় পাঁচ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সকাল সাড়ে ৭টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নেতা-কর্মীদের নিয়ে নগরীর রায়ের মহল বাজার থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ শুরু করেন। দীর্ঘ আড়াইঘণ্টা নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে তিনি এ এলাকায় প্রচারণা চালান। সকাল ১০টা থেকে তিনি নগরীর শেখপাড়া বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন। দুপুরে বায়তুন নূর জামে মসজিদে তিনি জুম্মার নামাজ আদায় করেন। বিকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নগরীর চানমারী বাজার, বান্দা বাজারসহ ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আগামী ১২ জুন ভোটকেন্দ্রে এসে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান। এছাড়া তালুকদার আব্দুল খালেকের নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন।
প্রচারণায় পিছিয়ে ছিলেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তিনি শুক্রবার সকাল ১০টায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা, কেডিএ এভিনিউ ও লবণচরা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট চান। ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল সকালে হাতপাখা মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন নগরীর গল্লামারী, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বান্দা বাজার, হঠাৎ বাজার, জোড়াকল বাজার এবং বিকালে গণসংযোগ করেন নতুন রাস্তার মোড়, নয়াবাটি, আলমনগর, হাউজিং এলাকা। এছাড়া জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক গণসংযোগ করেছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আগামী ১২ জুন ভোটগ্রহণ হবে। প্রার্থীরা ভোট আমেজে মেতে আছেন, যাচ্ছেন ভোটারদের দুয়ারে-দুয়ারে। এদিকে, নির্বাচন কমিশনও নিচ্ছে সব ধরণের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ, নির্ধারণ করা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র। জানানো হয়েছে, কেসিসির ৫৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, নির্বাচনে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১৬১টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট সম্পন্নের জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে কেসিসি। সব কেন্দ্রই সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে।
মো. আলাউদ্দিনের তদারকিতে শুক্রবার খুলনা সোনাডাঙ্গা মহিলা ক্রিড়া কমপ্লেক্সে ইভিএম মেশিনসহ ভোটের সব উপকরণ কেন্দ্র ভিত্তিক সাজানো-গোছানো ও তালিকা তৈরির কাজ চলেছে। ১১ জুন সকাল হতে এসব সরঞ্জম কেন্দ্রর প্রিজাংডিং কর্মকর্তার কাছে বুঝে দেয়া হবে।
মো. আলাউদ্দিনের জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে খুলনা মহানগরীতে তিন হাজার ৫৬৭ জন নিরস্ত্র পুলিশ, ৩০০ সশস্ত্র পুলিশ ও চার হাজার ৬৫৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।