সিরাজুল ইসলাম শ্যামনগর : আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে পশু মোটাতাজা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ খামার মালিক ও পালনকারীরা। কোরবানির বাজার ধরতে গরু মোটাতাজাকরণে এখন ব্যস্ত তারা। গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় এবার খরচও বেশি। সীমান্তবর্তী এই জেলায় চোরাপথে ভারতীয় গরুর আমদানি ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারিরা। এ বছর জেলায় মোট চাহিদার বিপরীতে বিক্রয়যোগ্য গরুর সংখ্যা অনেক বেশি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১০ হাজার ৯২৬ জন খামারি মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৮টি পশু পরিচর্যা করে কোরবানির জন্যে প্রস্তুত করেছেন। জেলায় এ বছর পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ৪৩৮টি। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পশু আছে ৪৪ হাজার ৫৬০টি। যেটা অন্য জেলায় পাঠানো সম্ভব। এছাড়া অন্যবারের তুলনায় এবার লাভ কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারিরা। কারণ গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। যারা শহরাঞ্চলে পশু পালন করেন তারা পুরোটাই বাজার থেকে কেনা খাবারের ওপর নির্ভরশীল। যার ফলে পশু পালন করতে যে খরচ হয় তা বাদ দিয়ে সামান্য লভ্যাংশ থাকছে তাদের।
সাতক্ষীরা সদরের আগরাদড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই প্রতিবেদককে বলেন, একটি গরুর পেছনে যে অর্থ খরচ করা হচ্ছে, বিক্রয় করে সেই তুলনায় লাভ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন গো-খাদ্যে, ভিটামিন ও রোগপ্রতিরোধক ওষুধসহ অন্যান্য খরচ অনেক বেশি সে তুলনায় গরুর দাম বৃদ্ধি হয়নি।
সদর উপজেলার আলিপুর গ্রামের কৃষক আরশাদ আলী বলেন, কোরবানি ঈদের হাটে বিক্রির জন্যে ৫ মাস আগে দুটি এঁড়ে কিনে লালন পালন করছেন। গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে গরু দুটি পালনে খরচ অনেক বেশি বেড়েছে। ন্যায্য দাম না পেলে লাভবান হওয়া যাবে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম আব্দুর রউফ জানান, গো-খাদ্যের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অন্যান্য জেলার মতো সাতক্ষীরাতেও ‘নেপিয়ার ঘাস’ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারা। আগামীতে খামারিদের গরুর খাবার তৈরি ও ঘাষ চাষের প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকে যাতে খামারিরা সহজে বাড়িতে গরুর খাবারের চাহিদা মেটাতে পারে ফলে গো-খাদ্যের দাম কমলে খামারিরা লাভবান হবে। সাতক্ষীরা সদরের অনেক খামারি জানান, ভারত থেকে গরু না আসায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভালো দাম পাওয়া যেতে পারে। গো-খাদ্যের দাম হাতের নাগালে থাকলে দেশে আরও খামারি বাড়বে বলে মনে করেন তারা। এদিকে জেলার শ্যামনগর উপজেলা ছোট-বড় শতাধিক গরুর খামারীরা গরু মোটাতাজা করণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গরুর খামারি আনোয়ার হোসেন বলেন একটা গরু মোটাতাজা লালন পালন করতে যে খরচ হয় বিক্রি করার সময় ক্রেতারা যা দাম বলে তাতে মনে খুব কষ্ট লাগে। তিনি আরো বলেন গরু মোটাতাজা করে বাজারে তুলে বিক্রি করার পর হিসাব করে দেখা যায় লাভ হয় না তবে কি গরু মোটাতাজা করার জন্য আস্তে আস্তে খরচ করা হয় আর বিক্রয় করলে একসাথে টাকাটা পাওয়া গেলে একটি কাজে লাগানো যায় সেই কারণে এই গরুর খামার করে গরু মোটাতাজাকরণ করি, কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের আব্দুল মান্নান জানান তিনি প্রতিবছর 10 থেকে 12 টি গরু মোটাতাজাকরণ করে কোরবানির সময় বাজারে বিক্রি করে কিন্তু এবার গো-খাদ্য যে দাম তাতে গরু মোটাতাজাকরণ করতে অনেক খরচ পড়ে যাচ্ছে বাজারে নিয়ে দাম চাইলে তো ক্রেতাদের চোখ দাঁড়িয়ে যাবে কিন্তু করবো কি খরচ তো করতে হচ্ছে।
কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত সাতক্ষীরার খামারিরা

Leave a comment