জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনায় লাইসেন্সবিহীন মেডিকেল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রকি অক্সিজেন কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ২নং কাস্টমঘাট এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে এই জেলা জরিমানা করেন।
জানা যায়, খুলনা জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের জন্য শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মঙ্গলবার দুপুর রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ও লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালে অভিযান চালান। এ অভিযানে অনুমোদিত দুইটি মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিলিন্ডার পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসের পূর্বে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করেছে তার কোন ক্রয় ভাউচার/রসিদ ভ্রম্যমান আদলতের কাছে দেখাতে পারেনি দুটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে তারা ক্রয় ভাউচার/রসিদ সরবরাহ করবে বলে জানান। পরে ২নং কাস্টমঘাট এলাকায় অননুমোদিত অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান “রকি অক্সিজেন” নামক প্রতিষ্ঠানে সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। সেখানে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের পাশাপাশি লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিল সম্বলিত মেডিকেল কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন গ্যাসের অনুরুপ সিলিন্ডার পাওয়া যায়। যার মধ্যে পাঁচটিতে গ্যাস ভর্তি ছিল এবং ত্রিশটি সিলিন্ডার খালি ছিল। এসময় প্রতিষ্ঠানটি মেডিকেল অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদনের অনুমোদনের স্বপক্ষে কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। অনুমোদন বিহীন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার অপরাধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিষ্ঠানের মালিক খুরশিদ আলমকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া তাকে অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারা দণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। জব্দকৃত অক্সিজেন ফেক্টরি এর সকল আলামত ২৫ নং ওর্য়াড কাউন্সিলার কাজী আবুল কালাম আজাদের জিম্মায় দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী। এ অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন, খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশনে সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ, উপ-সহকারী পরিচালক মুহা: অহিদুর রহমান, উপসহকারী পরিচালক মো: মহসীন আলী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তের ঔষধ পরিদর্শক রাব্বি আহমেদ, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক রিফাত-ই-আশরাফ, খুলনা সিভিল সার্জন কার্যলয়ের মেডিকেল অফিসার ডা: শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে লাইসেন্সবিহীনা রকি অক্সিজেন কারখানা লিন্ডা, স্পেক্ট্রাসহ নামীদামি ব্যান্ডের মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করে আসছে। যা অক্সিজেনে খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে। এই সব কারণে রোগীরা ঝুঁকিতে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, অভিযান চলাকালে কারখানার গোডাউন থেকে ৫টা অক্সিজেন ভর্তি স্পেক্ট্রা সিলিন্ডার, ১৮টি খালি লিন্ডা ব্রান্ডের সিলিন্ডার সহ ২৩৩ টি ইন্ড্রাস্টিয়াল গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। রকি অক্সিজেন কারখানাটিতে মেডিকেল অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদনের অনুমোদনের স্বপক্ষে মালিক কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।