বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিন
রূপসা প্রতিনিধি ও জন্মভূমি ডেস্ক : বিএনপি-জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি দলের ডাকা দ্বিতীয় দফায় অবরোধের প্রথমদিন খুলনার রূপসায় একটি ও রাজধানীতে চারটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রুপসা উপজেরার রূপসা-বাগেরহাট পুরাতন সড়কের তালিমপুর ভূমি অফিস সংলগ্ন মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন খুলনা-মোংলা লোকাল রুটের খুলনা-ব-৯১৭ নম্বরের “মায়ের আচল” যাত্রীবাহী বাসটি রোববার দুপুরে উপকারভোগীদের নিয়ে উপজেলার বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় ফেরার পর চালক অমিত কুমার দাস বাসটি তালিমপুরস্থ নৈহাটী ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন মসজিদের সামনে রেখে বাড়িতে যায়। এমতাবস্থায় কিছুসংখ্যক ব্যক্তি ভ্যানযোগে এসে বাসে অগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মোঃ সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অপরদিকে রাজধানীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চারটি বাসে আগুন দিয়েছে দুস্কৃতীকারীরা। আগুনের ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির শুরুতে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খিলগাঁও থানার বনশ্রী এলাকার মেরাদীয়ায় অছিম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এতে দগ্ধ হয়েছেন সবুজ মিয়া (৩০) নামে এক পরিবহন শ্রমিক। তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিন বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটের দিকে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৈতালী বাসে আগুন দিয়েছে অবরোকারীরা। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। তবে, ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই বাসের আগুন নির্বাপণ করেন বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এয়ারপোর্ট পরিবহন নামের বাসটিতে আগুন দেয়ার সময় বাসে যাত্রী থাকলেও কেউ হতাহত হননি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কাছাকাছি সময়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিরপুরের পল্লবী এলাকায় সেতারা কনভেনশন সেন্টারের সামনে শিকড় পরিবহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে। তবে আগুনের এসব ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর জানা যায়নি।
এছাড়া উত্তরা হাউজবিল্ডিং এলাকায় পুলিশের টহল গাড়িকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। ওই ককটেল বিস্ফোরিত হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মাহবুব আলীসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর বাইরে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে অবরোধ সমর্থনকারীদের বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত রাজধানীতে ৬টিসহ সারাদেশে ৯টি বাসে আগুন লাগার তথ্য পায় ফায়ার সার্ভিস। আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ও আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে এই সময়ে।