
জন্মভূমি রিপোর্ট : দুই একটি তুচ্ছ ঘটনা ছাড়া খুলনায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে এবার ভোটার উপস্থিতি ছিলো কম। এ নির্বাচনে শ্রমজীবী মানুষের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। খুলনার রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসিন আরেফীন জানান, কোথাও কোন সহিংসতার ঘটনার খবর পাননি। খুলনায় ৩০ প্রার্থী পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি সব বুথে!
খুলনা-৫ আসনের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে একজন ভুয়া পোলিং এজেন্টকে আটক করা হয়েছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়। ওই কেন্দ্রে তিনি নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। আটক জিল্লুর ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের নওশের বাগাতির ছেলে।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলম জানান, কেন্দ্রটিতে গিয়ে এজেন্টের দেখতে চাইলে তিনি নিজেকে এজেন্ট বলে পরিচয় দেন। তবে কোনো নিয়োগপত্র দেখাতে পারেননি। তাই তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা-৫ আসনে নির্বাচনে লড়ছেন ৪ জন প্রার্থী। তবে মূল প্রতিযোগিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের ঈগল প্রতীকের । এছাড়া খুলনা-৪ আসনে ১নং আরজি আজগড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে শিল্পি নামের এক মহিলাকে সামান্য মারধোরের ঘটনায় কিছুটা উত্তেজনা হয়। এছাড়া আর কোথাও অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা রিটানিং কর্মকর্তা আরো জানান, নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, কোষ্টগার্ড, পুলিশ ও আনসার কাজ করেছে।
খুলনায় ৩০ প্রার্থী পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি সব বুথে ঃ এবারের নির্বাচনে খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে ৩৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩০ জনই পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি সব বুথে। তবে সব ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট রয়েছে আওয়ামী লীগের ৬ প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের ৩ জনের।
খুলনা-১ আসনের ১১০টি ভোট কেন্দ্রের ৬৭০টি বুথে আওয়ামী লীগ মনোনীত ননী গোপাল মণ্ডল সব ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রশান্ত কুমার রায়, জাতীয় পার্টির কাজী হাসানুর রশীদ ও তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সব ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি।
খুলনা-২ আসনের ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রের ৮৪৫টি কক্ষের সব কয়টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। তবে সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বাবু কুমার রায়, বিএনএম’র মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম, গণতন্ত্রী পার্টির মো. মতিয়ার রহমান ও স্বতন্ত্র মো. সাঈদুর রহমান।
খুলনা-৩ আসনের ১১৬টি ভোট কের্ন্দের ৬৩৩টি বুথে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন সব ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। তবে সব ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও স্বতন্ত্র ফাতেমা জামান সাথী।
খুলনা-৪ আসনের ১৩৩টি কেন্দ্রের ৮০৫টি বুথে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। বাকি ১০ জন প্রার্থী সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি। তারা হলেন স্বতন্ত্র এম ডি এহসানুল হক, বিএনএম’র এস এম আজমল হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা, স্বতন্ত্র মো. জুয়েল রানা, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ, এনপিপি’র মো. মোস্তাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র মো. রেজভী আলম, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দিন খান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান ও স্বতন্ত্র এইচ এম রওশান জামির।
খুলনা-৫ আসনের ১৩৫টি ভোট কেন্দ্রে ৮৪৫টি বুথে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নারায়ন চন্দ্র চন্দ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের শেখ আকরাম হোসেন সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। তবে সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেননি জাতীয় পার্টির মো. শাহীদ আলম, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের এস এম এ জলিল।
খুলনা-৬ আসনের ১৪২টি ভোট কের্ন্দের ৯২২টি কক্ষের সবগুলোতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা জি এম মাহবুবুল আলম পোলিং এজেন্ট দিয়েছেন। তবে সব বুথে পোলিং এজেন্ট দেননি বিএনএম’র এস এম নেওয়াজ মোরশেদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মির্জা গোলাম আজম, এনপিপি’র মো. আবু সুফিয়ান, তৃণমূল বিএনপির মো. নাদির উদ্দিন খান ও জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু।
খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, আমরা কোন আসনেই এজেন্ট দেইনি। তিনি নির্বাচন নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন।