জন্মভূমি রিপোর্ট : সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। রোববার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির নিজ নিজ ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেড প্রদান ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. তরুণ কান্তি বোসের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. ইয়াছিন আলী, প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. এ টি এম জহিরউদ্দিন, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. সমীর কুমার সাধু, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, সয়েল ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর মো. সানাউল ইসলাম, সমিতির সাবেক সভাপতি ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন, প্রফেসর ড. মো. মতিউল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. তুহিন রায়, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোর্তুজা আহমেদ। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাহী পরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার দাবিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আসাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশিকুল আলম, বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. শরীফুল ইসলাম, অ্যাগ্রিকালচার স্ট্যাটিসটিক্স অ্যান্ড বায়োইনফরমেটিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হুমায়রা ইয়াসমিন ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ পন্ডিত বক্তব্য দেন। ৪ জুনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে হলে ওইদিনই আন্দোলনের বৃহত্তম কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
একই দাবিতে কুয়েট শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতার স্তম্ভ ‘দুর্বার বাংলা’র পাদদেশে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল হাসিব।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের (ইউআরপি) সহকারী অধ্যাপক শারফান উপল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের (আইএম) প্রভাষক আসেফ শাহরিয়ার, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (ইএসই) সহকারী অধ্যাপক মো. মাহমুদুল আলম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (এমই) অধ্যাপক ড. মো. হেলাল আন নাহিয়ান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাসিবুল হক, আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের (ইউআরপি) সহযোগী অধ্যাপক তুষার কান্তি রায়, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (সিএসই) প্রফেসর ড. কাজী মো. রকিবুল আলম।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম পরিপূর্ণ সর্বজনীন নয়। এই পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত হলে শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন এবং মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ হারাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ না দিলে দেশ মেধাশূন্য হওয়ার পথে অগ্রসর হবে। এখানে নতুন একটি নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষকরা পদোন্নতি পান। ফলে দেখা যাবে, পদোন্নতি পাওয়ার পর বর্তমান শিক্ষকরাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পড়বেন। তাই অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এই বৈষম্যমূলক স্কিমের আওতামুক্ত রাখতে হবে। এ সময় বক্তারা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়ন এবং সুপার গ্রেড প্রদানের দাবি জানান। দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।