এম সাইফুল ইসলাম
মোঃ আবুল হোসেন। খুলনা টু পাইকগাছা রুটের ড্রাইভার তিনি। দীর্ঘদিন গাড়ি বন্ধ। গাড়ি বন্ধ থাকায় কর্মও বন্ধ। তিনি জানান এ পর্যন্ত সরকারি কোন সহযোগিতা পাইনি। শ্রমিক সংগঠন থেকে কোন সহযোগিতা দেয়নি। সংসারের সদস্য পাঁচ জন। সদস্যদের নিয়ে বিপদের মধ্যে রয়েছেন তিনি।
লকডাউনের সময় সংসার চালাতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকা শোধ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ২৩ বছরের কর্মজীবনে তিনি এ রকম কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হননি বলে তিনি জানান। শুধু তিনি একাই নন, তার মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে খুলনা বিভাগীয় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আট হাজার সদস্য।
খুলনাসহ সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। এ লকডাউনে গাড়ির চাকা না ঘুরলে আয় বন্ধ থাকে মোটর শ্রমিকদের। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই পরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের কর্মসংস্থান বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ রোধে খুলনা জেলা প্রশাসন লকডাউনের ঘোষণা দেয়। এর সাথে জুড়ে দেওয়া হয় কতিপয় বিধি নিষেধ। গণপরিবহন এর আওতাভুক্ত হওয়ায় এ সংগঠনের আট হাজার শ্রমিকের আয় একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। আর কত দিন বসে থাকতে হবে তার কোন নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে এ সংগঠনের সদস্যদেরকে।
খুলনা টু মোংলা রুটের কাউন্টারের মো: তামিম জানান, কাজ বন্ধ। কিন্তু পেট তো বন্ধ নেই। চার সদস্য নিয়ে তার পরিবার। ধার দেনা করে জীবন চলে না। দুঃসময়ে শ্রমিকের পাশে সরকারের সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত। পরিবহন সেক্টরের চাকা সচল রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী নুরুল ইসলাম বেবি জানান, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ শ্রমিকরা এ কঠোর লকডাউনে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা কখনো অর্ধাহারে কখনো অনাহারে জীবনযাপন করছেন। লকডাউনের শুরুতে সরকার খুবই স্বল্প পরিসরে সহযোগিতা করলেও বর্তমানে একেবারে কোনো সহযোগিতা করছেন না।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম জানান, খুলনাঞ্চলে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে। দিনদিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে। মানুষ এর ভয়াবহতা গণমাধ্যমে দেখছে। এরপরেও তারা সচেতন হচ্ছে না। বড় বাজারে মুখে মাস্ক না পরে ঘুরতে আসা একজনকে দুই শত টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি এর সদুত্তর দিতে পারেননি। জেলা প্রশাসনকে সাহায্য করতে আমাদের সাথে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটেলিয়ান সদস্যরা ছিলেন।
খুলনায় ভালো নেই পরিবহন শ্রমিকরা
Leave a comment