খুমেকে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু
শেখ আব্দুল হামিদ : বৃষ্টি শেষ হতে যাওয়ায় খুলনা বিভাগে মশার উপদ্রব ব্যপক ভাবে বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু সনাক্ত হয়েছে ৫৮ জনের দেহে। এসময় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমা (২২) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া এলাকায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ২ জনের। আর খুলনা বিভাগে ৮ মাসে মোট মৃত্যু হলো ৪ জনের।
চলতি বছর পহেলা জানুয়ারী থেকে ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৮ মাসে খুলনা বিভাগে মোট ৮৮১ জনের দেহে ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত হয়েছে। এসময়ের মধ্যে প্রাণ গেছে যশোর জেলায় ২ জন ও খুলনা মেডিকেলে ২ জনের। বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে বেধে থাকা পানিতে মশার লার্ভা নতুন করে জন্মনিচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছিল মাত্রাতিরিক্ত। ২০২৩ সালে খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ৭৪৭ জন। এ সালে মোট মৃত্যু হয় ১২৫ জনের। শুধু খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ৩৯ জনের।
চলতি বছর আট মাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে খুলনা জেলায় রয়েছেন মোট ৩০০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে জেলায় ২০৯ ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯১ জন। বাগেরহাট ১৭ জন, সাতক্ষীরায় ৩৪ জন। এর মধ্যে জেলায় ১০ ও মেডিকেলে ২৪ জন। যশোর জেলায় ২০৪ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ৩৫ জন, মাগুরায় ১২ জন, নড়াইল জেলায় ১১১ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ৪৬ জন ও মেহেরপুর জেলায় ১২২ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৫২ জন আর চিকিৎসাধিন আছেন ১২৫ জন।
বিভাগে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয় খুলনা জেলায় ৬ হাজার ৮৩৪ জন। এদের মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন, ৩ হাজার ৮২৫ জন। তার পরেই ছিল মাগুরা জেলায় ৫ হাজার ২৯ জন। এ ছাড়া বাগেরহাট ১ হাজার ৭২২ জন, সাতক্ষীরায় ৭৫৮ জন, যশোর জেলায় ৪ হাজার ৯৭৫ জন, ঝিনাইদহ ৪ হাজার ১৯৪ জন, নড়াইল ২ হাজার ৮৯৪ জন, কুষ্টিয়ায় ৪ হাজার ৫৫৮ জন, চুয়াডাঙ্গায় ৮৮১ জন, মেহেরপুর ২ হাজার ১৭৬ জন, সাতক্ষীরা মেডিকেলে ৭৪১ জন। এসময় খুলনা জেলায় মোট মৃত্যু হয় ৪১ জনের। এর মধ্যে ছিলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৯ জন। এছাড়া বাগেটহাট জেলা ২ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, যশোর জেলায় ১৯ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ১১ জন, মাগুরায় ৬ জন, নড়াইল ৬ জন, কুষ্টিয়ায় ২৯ জন, মেহেরপুর ১ জন ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জনের মৃত্যু হয়।
সার্বিক বিষয় নিয়ে খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মুঞ্জুরুল মুর্শিদ বলেন, বৃষ্টি শেষ হতে চলেছে। তবে মশা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মানুষদের সচেতন হওয়ার কোন বিকল্প নেই। সচেতন না হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ছাড়াবে। তবে আশা করছি আগের মত ভয়াবহ রূপ নিতে পারবে না।