হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া : আজ সোমবার ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার খোকসা পাক হানাদার মুক্ত দিবসপালিত হয়েছে । দিবসটি পালনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রশমাল্য অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা কমান্ড খোকসা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আখতার।
খোকসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে উক্ত আলোচনা সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক, খোকসা থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল গফুর ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আব্দুল মতিন।
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানা পাক হানাদার মুক্ত হয়। থানা সদরের খোকসা হাইস্কুল, শোমসপুর হাইস্কুল, গনেশপুরের গোলাবাড়ীর নিলাম কেন্দ্র, মোড়াগাছায় রাজাকার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ জনপদে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে এলাকার মুক্তিপাগল মুক্তিযোদ্ধাদের মুজিব বাহিনীর একটি ইউনিট।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে মুজিববাহিনী কমান্ডার আলাউদ্দিন খান,কে এম মোদ্দাসের আলী, আলহাজ সদর উদ্দিন খান, নুরুল ইসলাম দুলাল, আলহাজ সাইদুর রহমান মন্টু, রোকন উদ্দিন বাচ্চু,তরিকুল ইসলাম তরুর নেতৃত্বে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা থানা দখলের জন্য চার দিক থেকে আক্রমণ করে।
রাতভর গুলি বিনিময়ের পর প্রত্যুষে ১০৫ জন পুলিশ ও রাজাকার আলবদর আলশামস্ সদস্য আত্মসমর্পণ করে। ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন খান, মোদ্দাচ্ছের আলী, আলহাজ সদর উদ্দিন খান, গোলাম ছরোয়ার পাতা, আলহাজ সাইদুর রহমান মন্টুসহ মুক্তিযোদ্ধারা।
এ সময় দখল করা ৭৯ টি রাইফেল ২ টা পিস্তল ও ৫ টা বন্দুক সহ প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও আটককৃতদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে ক্যাম্পে পৌছায়। পরে ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের একটি বড় দল আবারও থানা দখলের চেষ্টা করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে মিলিশিয়া ও পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের দলটি খোকসা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
সেই থেকেই ৪ ডিসেম্বর খোকসাই পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালন করা হয়।