খুবি প্রতিনিধি : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন ক্লাবের উদ্যোগে ‘ইনভেন্টাম ৩.০’ উপলক্ষ্যে ‘ন্যাচার ইন ক্রাইসিস: আন্ডারস্ট্যান্ডিং ফ্লাডস্ এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, গবেষণা হতে হবে সবসময় ইমপ্যাক্ট বেজড ও জনকল্যাণমূলক। যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয় এবং তারা বুঝতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সমাজে কি প্রভাব রাখছে। ফলে সমাজের মানুষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখতে হবে, স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হবে। অনেক প্রতিবন্ধকতা আসবে, তা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে। এ ধরনের সেমিনার/কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বহুমাত্রিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যাতে পরবর্তী জীবনে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগানো যায়।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের সেমিনারে প্রধান অতিথি বক্তব্য তিনি এ-সব কথা বলেন। ক্লাবের সভাপতি গৌরব কুমার পালের সভাপতিত্বে সেমিনারে কিনোট স্পিকার ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর মো. সানাউল ইসলাম ও ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মো. এনামুল হক।
ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে বন্যা বেশি হয় উল্লেখ করে, উপাচার্য আরো বলেন, খুলনা অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৪-৫ ফুট উঁচুতে। এর পাশাপাশি পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং শহর অঞ্চলে থাকা খালগুলো ভরাট করে রাখার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা ও জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে খুলনা। এ বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ও জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছিল। বিশেষ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ময়ূর নদীতে পানি যাওয়ার সংযোগস্থলটি দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বর্ষার পানি যথাযথভাবে বের হতে পারে না। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আগামীতে এই সমস্যা দূর করতে না পারলে আরও অধিক সময় জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে। তিনি আরও বলেন, বন্যা আমাদের জন্য দুর্ভোগ ও আশীর্বাদ দুটোই। নদীর পানির কারণে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ফলে আমরা ভালো ফসলও পাই। তাই এটাকে শুধু দুর্ভোগ ভাবা যাবে না।
উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে চাকরির বাজার সঙ্কুচিত। তাই শুধুমাত্র চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে উদ্যোক্তা হলে অন্যের জন্যও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি এ ধরনের একটি সেমিনার আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্লাবের সদস্যদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতেও সময়োপযোগী ও বাস্তবধর্মী সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জেরিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী শুভদীপ গোলদার ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী অনিন্দিতা বিশ্বাস। এ সময় ক্লাবের সদস্য ও সেমিনারে অংশগ্রহণকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপাচার্য ‘ইনভেন্টাম ৩.০’ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আর্টিকেল রাইটিং (বাংলা ও ইংরেজি) এবং কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে সনদপত্র ও মেডেল বিতরণ করেন।