জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির অর্ধেকই শিশু। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৩ শতাধিক ফিলিস্তিনি।
টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। অবিরাম এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ১৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। রোববার (২৯ অক্টোবর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রুশ বার্তাসংস্থা তাস এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে বলে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি গোলাবর্ষণ ও বোমা হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যার অর্ধেকই শিশু।’
অন্যদিকে গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে আল হাদাথ টিভি চ্যানেল বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে প্রায় সর্বশেষ আপডেটে ৭ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছিল।
এছাড়া গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ভূখণ্ডটিতে আহত মানুষের সংখ্যা ১৯ হাজার ছুঁয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০০ ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি। এছাড়া আরও ২২৯ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
হামাসের হাতে আটক বিপুল এসব বন্দির মধ্যে ইসরায়েলি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিকও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজেও গাজায় আটক সব বন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।
এই ঘটনার জের ধরে গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।