জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় রোববার আরও ৩৩ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলের নিরবিচ্ছিন্ন হামলার মধ্যে গত সপ্তাহে গাজায় প্রথম ২০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করে। এরপর গাজায় প্রবেশ করা ত্রাণের সবচেয়ে বড় চালান এটি।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, মিশরের সাথে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে রোববার ত্রাণবাহী ৩৩ ট্রাক প্রবেশ করে। এসব ট্রাকে ছিল পানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী। খবর আল জাজিরার
সোমবার ভোরে গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি আপডেটে ওসিএইচএ জানিয়েছে, ‘এটি ২১ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় মানবিক সহায়তার বৃহত্তম চালান। সেখানে সীমিত পরিসরে ত্রাণ বিতরণ আবার শুরু হয়েছে।’
জাতিসংঘের সংস্থাটি বলেছে যে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় ত্রাণবাহী ১১৭টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। যদিও সেটি গাজার প্রায় ২৪ লাখ মানুষের জন্য অপ্রতুল। অবরোধের আগে, প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সাহায্য এবং অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করত।
ইসরায়েল গাজায় সর্বত্মক অবরোধ আরোপ করেছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বেশিরভাগ হাসপাতালগুলো জেনারেটরের মাধ্যমে চলছে। বেশিরভাগ হাসপাতালই জ্বালানি সংকটে ভুগছে। এমন অবস্থায়ও গাজায় এখন পর্যন্ত কোনও জ্বালানী সরবরাহ করা হয়নি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি শিশু। এছাড়া এ বর্বর হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯ হাজার ৭৩৪ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হয়েছেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় হাজার হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশাল অবরুদ্ধ এই উপত্যকার অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েল গাজায় তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করছে। সেখানে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে।
মার্কিন সরকারের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোববার বলেছেন যে, ইসরায়েল প্রতিদিন ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতিসংঘ বলেছে যে, সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা মেটাতে এটির প্রয়োজন।
ওসিএইচএ ত্রাণবাহী ট্রাকের গাজায় প্রবেশকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে তারা জানিয়েছে এটি সাহায্যপ্রার্থী মানুষের তুলনায় অনেক কম। আরও বেশি ত্রাণ পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, ‘বিশেষ করে, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং পানি ও স্যানিটেশন সুবিধাগুলো চালানোর জন্য জ্বালানীর জরুরী প্রয়োজন।’