জন্মভূমি ডেস্ক : ফেসবুকে ‘গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার ভাঙা কর্মসূচি’ ইভেন্ট তৈরি করে ১১ সেপ্টেম্বর গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার ভাঙার হুমকি দেওয়া হয়। সেখানে প্রায় ২২ হাজার মানুষ সাড়া দিয়েছিল।
এই হুমকির কারণে সকাল থেকে মাজারটি ঘিরে রেখেছে ভক্তরা। এসময় ভক্তরা বলছেন, প্রয়োজনে মাজার রক্ষায় তারা সকলে জীবন দিতে প্রস্তুত।
তবে যারা মাজার ভাঙবেন বলে হুঁশিয়ারি করেছেন তাদের কাউকে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজার ভাঙার ঘটনা ঘটছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুইটার দিকে সরেজমিনে গোলাপ শাহ মাজার ঘুরে দেখা যায়, মাজারের চারিদিকে শতাধিক ভক্তরা অবস্থান করছে। ভক্তদের বড় একটা অংশ মাজারের চারিদিকে বিভিন্ন গলিতে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এদিকে মাজারের সামনে কেউ সিজদাহ করছেন আবার কেউ করছেন প্রার্থনা। অনেকেই প্রতিবাদ জানাতে জড় হয়েছেন। পাশাপাশি মাজার ভাঙা দেখতে আসা উৎসুক জনতার লক্ষ্য করা গেছে। তবে যারা মাজার ভাঙবেন বলে হুঁশিয়ারি করেছেন তাদের কাউকে এই রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত দেখা যায়নি।
মাজারের সামনে দাঁড়িয়ে সুফি কমিটির আহবায়ক সৈয়দ গোলাম মইনুদ্দিন ইয়াজুড়ী বলেন, মানুষ সঠিক কথা পেয়ে যায় বলে তারা পাগল ফকিরকে ঠেকিয়ে রাখতে চায়। কেননা তাদের ধর্মব্যবসায় আঘাত লাগে, এতিমখানা দিয়ে ব্যবসা করে, নামাজ দিয়ে ব্যবসা করে, আযান দিয়ে ব্যবসা করে মসজিদ দিয়ে ব্যবসা করে, এমনকি মসজিদে পায়খানা দিয়েও ব্যবসা করে।
তিনি বলেন, সুরা ইয়াসিন এর ২১ নাম্বার আয়াতে বলা আছে, যারা ধর্মের বিনিময়ে কিছু চায়, তোমরা তাদের মানিও না। তাই তারা যদি এই অলি আল্লাহর পাগলদের মাজার ভাঙতে পারে তাহলে তাদের ধর্মব্যবসা আরও চাঙা করতে পারবে। তারা নামাজের কাফফারাসহ বিভিন্ন ধান্দাবাজির কাফফারা নিয়ে থাকে। এসব কাফফারা দিয়ে তারা তাদের পেট চালায়। অলি আল্লাহর পাগলরা সঠিক কথা বলে দেয়, এজন্য তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য তারা এসব মাজার ভাঙার মতো অপকৌশল করছে। ইনশাল্লাহ অলি আল্লাহর পাগলরা সজাগ আছে।
সুফি কমিটির এই আহবায়ক বলেন, আল্লাহ বলেছেন তোমরা সত্যবাদীদের সাথী হও। আমরা এই দুনিয়াতে গোলাপ শাহ’র সাথী হয়েছি। আমরা এই দুনিয়াতে মাইজ ভান্ডারির সাথী হয়েছি। আমাদের কোন ভয় নাই। সৎ পথে যে লোক মরে, সেই শহীদ হয়। আমরা অলি আল্লাহর পথে রয়েছি, এই পথে জীবন দিতে রাজি আছি। এই বাংলাদেশে কোন জঙ্গিবাদের ঠাঁই নাই।
উল্লেখ্য, সাধারণত সুফি বা ধর্মীয় প্রচারকদের কবর কেন্দ্রিক মাজার গড়ে ওঠে। যেখানে অনেকে মনোকামনা পূরণের উদ্দেশ্যে মানত করে থাকেন। যদিও ইসলামিক রীতিতে মাজার ব্যবস্থা কতটা ধর্মসম্মত, তা নিয়ে স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।