জন্মভূমি ডেস্ক : চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে ও ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে বাস-পিকআপ-অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চারিয়া ইজতেমার মাঠ এলাকায় বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহতরা সবাই একই পরিবারের।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বোর্ড স্কুল এলাকায় চট্টগ্রামমুখী বাসের সঙ্গে ফটিকছড়িগামী অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নাজিরহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. আদিল মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতরা একই পরিবারের আত্মীয়। ১৫ দিন আগে রিতা রানি দাশের দাদা মারা যান। তারা রিতা রানি দাশের দাদার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, রিতার বাপের বাড়ি ফটিকছড়ির শাহনগর গ্রামে। শ্বশুরবাড়ি চন্দনাইশের জোয়ারা মোহাম্মদপুর গ্রামে। নিহতদের মধ্যে রিতাসহ তার চার সন্তান রয়েছে। অন্য দুজনের মধ্যে একজন রিতার ভাসুরের ছেলে, অন্যজন ননদ।
অপরদিকে ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দা-বাইপাস সড়কে এ বাস দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নগরীর শিকারীকান্দা এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত যাত্রীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা থেকে শেরপুরগামী ফায়াজ ট্রাভেলসের একটি যাত্রীবাহী বাস ময়মনসিংহ শহরের দিকে আসছিল। দ্রুতগতির বাসটি রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস সংলগ্ন শিকারিকান্দা এলাকায় ওভারটেক করার সময় একটি পিকআপভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এসময় যাত্রীবাহী পিকআপ ভ্যানটি মহাসড়কের পাশে উল্টে যায় এবং বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে রোড বিভাজকে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যায়।
খবর পেয়ে এলাকাবাসী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল পৌঁছে গুরুতর আহত ১৫ জনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও দুইজন মারা যায়। দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে একঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
বাসটির আহত যাত্রী আজিজুল হক জানিয়েছেন, গাজীপুর পার হওয়ার পর থেকেই বাসটি অতিরিক্ত গতিতে উল্টাপাল্টা চালাচ্ছিলেন চালক। এতে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার ঘটার মতো অবস্থা হয়েছিল। যাত্রীরা বারবার তাকে ধীরে চালানোর জন্য বলছিলেন। তিনি কারো কথা না শুনে বেপরোয়া গতিতেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। অবশেষে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ সরদার জানান, রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আমরা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। পরে আমাদের পাঁচটি ইউনিটসহ পুলিশ সদস্যরা এসে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যান। আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ভেঙে পড়া বিলবোর্ডে সড়ক থেকে সরানোর কাজ চলছে।