অভিজিৎ পাল
চার শতক জমি নিয়ে প্রতিবেশীদের নামে অপহরণসহ চার মামলা করেছেন খুলনার নিখোঁজ রহিমা বেগম। দাবী করেছেন, রহিমা বেগম অপহরণ মামলার গ্রেফতার এজাহারভুক্ত পাঁচ ব্যক্তির পরিবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য বিষয়টি তুলে ধরেছেন আমাদের নিকট। রহিমা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী মান্নানের তিন বিয়ে। তার মধ্যে এক পক্ষের দুই ছেলে। তারা সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থাকেন। যাদের একজনের নাম মিজান।
দিঘলিয়ার ৮নং যোগীপোল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মো: মামুন শেখ বলেন, মান্নানের অপরপক্ষের সন্তান মিজান এলাকায় বিভিন্ন সময় সালিশ বসিয়েছে তাদের সম্পত্তির বিষয়ে। রহিমা বেগম মিজানদের জমি দিতে রাজি ছিলেন না। পরে মিজানদের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকায় কিনে নিতেও চান। কিন্তু সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় মিজান সাড়ে তিন লক্ষ টাকায় স্থানীয় একজন মোহরের নিকট জমি বিক্রি করেন। পরে ২০১৯ সালে মহেশ্বরপাশা এলাকার রহিমা বেগমের প্রতিবেশী গোলাম কিবরিয়া ও হেলাল শরীফ মোহরের কাছ থেকে জমি কিনে নেয়। সেখান থেকেই বিভিন্ন সময়ে সিভিল মামলা, ধর্ষণ মামলা, মারামারির মামলা, সবশেষ অপহরণ মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার ভাই মুছলিম ইসলাম বলেন, প্রথমে রহিমা বেগম বাটোয়ারী মামলা করেন। পরে তারা একটি ধর্ষণ মামলা করেন যাতে আসামি করেন শরিফুল ও লিটনকে।
মুছলিম ইসলাম দাবি করেন ওই সময়ে শরিফুল ও লিটনের বয়স ছিল আট থেকে ১০ বছর। একই রকম দাবি গোলাম কিবরিয়ার ভাই মহিউদ্দিনের মেয়ে মালিহা মহিউদ্দিন মাহিরও। তিনি বলেন, এই সম্পত্তি নিয়ে যারা আমাদের উপকারে এসেছেন তাদেরকে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছে রহিমা ও মরিয়ম মান্নানরা।
তবে প্রতিবেশী হয়ে যে সম্পত্তির শরীকদের মধ্য জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে সেই জমি কেনার কারণ কি? এমন প্রশ্নে গোলাম কিবরিয়া পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য এমন তারা তো মোহরের নিকট থেকে কিনেছেন। বাটোয়ারী মামলার কারনে তারা জমির দখলেও নেই এখন।
অপর জমি ক্রেতা হেলাল শরীফের মেয়ে আন্তারা ফাহমিদা বলেন, সব বাবাই চান তার ছেলে মেয়ে ও নিজের ভবিষ্যতের জন্য জমি কিনতে। এ কারণেই বাড়ির পাশে তার বাবা জমি কিনেছিলেন। তখনতো আর তিনি জানতেন না এই জমি নিয়ে তাকে মিথ্যা অভিযোগের মামলায় জেল খাটতে হবে।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে রহিমা বেগম অপহরণ হয়েছে বলে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন তার ছোট মেয়ে আদুরী আকতার। মামলায় আসামি করা হয়েছে রহিমা বেগমের পাঁচ প্রতিবেশীকে। যার মধ্যে রয়েছে জমির দুই ক্রেতা হেলাল শরীফ ও গোলাম কিবরিয়া এবং গোলাম কিবরিয়ার তিন ভাই। বর্তমানে পাঁচজনই কারাগারে। এর ২৮ দিন পর দৌলতপুর থানা পুলিশ ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করে রহিমা বেগমকে। তার আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে অজ্ঞাত এক লাশের ছবি ও পোশাক দেখে নিজের মা বলে দাবি করেন রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান।
উদ্ধারের পর ২৫ সেপ্টেম্বর মেয়ে আদুরী আক্তারের বাড়ির জিম্মায় রহিমা বেগমকে ছেড়ে দেয় আদালত। বর্তমানে রহিমা বেগম তার বড় মেয়ে মরিয়ম মান্নানের সাথে ঢাকায় রয়েছেন। উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ে মরিয়ম মান্নানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
চার শতক জমি নিয়ে প্রতিবেশীদের নামে অপহরণসহ চার মামলা
Leave a comment