জন্মভূমি রিপোর্ট
কথায় আছে নিজ গৃহে পরবাসী। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে খুলনাতে। জমি বিক্রয় করে বিপাকে পড়েছেন নগরীর টুটপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান খান। নিজ সম্পত্তি বিক্রয় করার পর ক্রেতার চাতুরতা আর দখলবাজীর কারণে নিজেই এখন নিজের জমির মূল অংশ দখল রাখতে পারছেন না। এব্যাপারে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি বিষয়টি মিমাংসার করার চেষ্টা করলেও চতুর ক্রেতা তা মানতে নারাজ। ইতোমধ্যে লবণচরা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্রেতাকে তার নির্দেশনা দিলেও তা মানছে না।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো: মিজানুর রহমান খান আর্থিক প্রয়োজনে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত লবণচরা থানার আলুতলা মৌজার ৭২ নং খতিয়ানের ১৭০ নং দাগের মধ্য থেকে ২ দশমিক ৫০ কাঠা জমি গত বছর কবলা দলিল মূলে বিক্রয় করেন বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত এস কে আবু হাসানের নিকট। জমি বিক্রয়ের কাজটি সম্পন্ন হয় একই ব্যাংকের কর্মরত শেখ বাসির উদ্দিনের মাধ্যমে। গত ৩০-০৭-২২ ইং তারিখে দলিলের চৌহদ্দি মোতাবেক উক্ত ২জনের উপস্থিতিতে জমি বুঝিয়া দেওয়া হয়। এ সময় উভয় পক্ষ মেনে নিয়ে সীমানা করে চলে আসেন। কিন্তু পরবর্তীতে গত ১০ আগস্ট প্রবল বর্ষণের সময় ক্রেতা এস কে আবু হাসান গোপানে সেখানে যেয়ে চৌহদ্দির বাইরে যেয়ে জমি দখল করেন এবং বিক্রেতার অবশষ্টি জমিতে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে জমি বিক্রেতা মো: মিজানুর রহমান খান জমিতে যান এবং হাসানের লোকজনদের কাজ বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তারা তা না শুনে জোরপূর্বক জায়গা দখল রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে আবু হাসানের লোকজন চলে গেলেও রাতে আবার আবু হাসান নিজে উপস্থিত হয়ে সেখানে একটি নামকাওয়াস্তে টোংঘর তৈরি করেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকার মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দও জানতে পারেন। তারা সকলেই তাকে ওই ঘটনাস্থলে যেয়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য বললেও এস কে আবু হাসান হাজির হননি। তার অনুপস্থিত ও জোরপূর্ব চৌহদ্দি ছাড়া জায়গা দখলের ঘটনাটি বিক্রেতা মিজানুর রহমানের কাছে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। তিনি ধারণা করছেন জোরপূর্বক দখল ও টিনের টোংঘর তৈরি করার কারণে ক্রেতা আবু হাসান ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের কোনো ফন্দি আটছেন। তার কথা বার্তাগুলো এক প্রকার ভ‚মিদস্যূতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও এধরনের চাতুরতা আর দখলবাজীর কারণে এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পরবর্তীতে মো: মিজানুর রহমান কেএমপির লবণচরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন গত ১৪-০৮-২২ ইং তারিখে। লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সঙ্গে একত্রে বসেন এবং চৌহদ্দির বাইরে না যাওয়ার জন্য ক্রেতাকে জানিয়ে দেন। সে মোতাবেক চৌহদ্দির ভেতরে তার নির্মাণ করা টোংঘরসহ পূর্বে সীমানায় ফিরে যাওয়ার কথা বললেও অদ্যাবধি তা সরানো হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই এস কে আবু হাসান এর আগেও নগরীর জিরো পয়েন্টে এলাকায় কৃষ্ণনগর মৌজার ১৪০ নং খতিয়ানের ৬৪ নং দাগের একটি জমি নিয়ে একই কর্ম করেছিলেন তার নিজ অফিসের কর্মরত আলমগীর হোসেন সঙ্গে। তার অফিসের অনেকেই বলেন, তার এই কর্মকাÐে গোটা ব্যাংক পাড়ায় ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর যাতে করে অপরাধ সংঘটিত না হয় তার জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে বসাবসি হয়েছে। সেখানে ক্রেতা আবু হাসানকে চৌহদ্দি অনুযায়ী এক পাশ থেকে জমি নিতে বলা হয়েছে।
জমি বিক্রয় করে বিপাকে পড়েছেন নগরীর মিজানুর রহমান খান
Leave a comment