মো: এজাজ আলী
ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ২ দিন। জোড়াগেটে জমে উঠছে পশুর হাট। বৃহস্পতিবারও বলার মতো পশু বিক্রি হয়নি। বেশিরভাগ ক্রেতারা গরু দেখছেন, দরদাম করছেন, কিন্তু কিনছেন কম। ক্রেতারা গরুর দাম বেশি অভিযোগ করলেও বিক্রেতারা তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, পশু খাদ্যের দাম দ্বিগুন হলেও গরুর দাম সেভাবে বাড়েনি। বেচাকেনা কম হলেও হাটে লোকসমাগম রয়েছে চোখে পড়ার মতো। ৩ জুলাই উদ্বোধনের পরের তিনদিন নগরীর জোড়াগেট পশুর হাটে মাত্র ১০টি গরু ও ৫টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। হাসিল আদায় হয়েছে ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা। বৃহস্পতিবার সারা দিনে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮৩টি পশু। দিনভর অলস সময় পার করেছেন হাসিল আদায়কারীরা।
হিসাবরক্ষক বলেন, ‘এখনও পশু বিক্রি শুরু হয়নি। ঢাকায় তো পশু রাখার সমস্যা, এ কারণে দেখা যায় ঈদের দুই দিন আগে থেকে বিক্রি শুরু হয়। আমরা আশা করছি বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিক্রি বাড়বে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জোড়াগেট পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, পর্যাপ্ত পরিমান গরু এসেছে হাটে। ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের গরু রয়েছে। খুলনার আশপাশের অঞ্চল থেকে ট্রাক, ভটভটি ও পাওয়ার ট্রলিতে শত-শত গরু আসছে হাটে। ক্রেতারা পছন্দের গরু দেখছেন আর দরদাম করছেন। গরুর পাইকাররা গরুর সাইজ অনুসারে দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ক্রেতাদের। দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসাবে গরুর মালিকরা জানান, গো-খাদ্যের দাম বেশি হলেও গরুর দামতো সে তুলনায় বেশি হয়নি। দাম বেশি হলেও মানুষ তার সাধ্যের মধ্যে কোরবানী দিতে পারবে। খালিশপুরের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ব্যাপারিরা অনেক দাম হাঁকাচ্ছেন। গরু হিসাবে যার দাম অনেক বেশি। ফলে এখনও কেনার মতো হয়নি। গরু আসছে, তাই কিনতে একটু সময় নিচ্ছেন। অপর ক্রেতা মাহবুব আলম বলেন, দাম সম্পর্কে ধারনা নিয়েই হাটে এসেছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দাম কিছুটা বেশি বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার এসে দেখেশুনে গরু কিনবো। হাটে গরু বাড়লে দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
হাটের সবচেয়ে বড় গরুটি কালো রঙের ধলা মালিক। এসেছে কালিয়া থেকে। গরুর মালিক জাহাঙ্গীর জানান, গরুর ওজন ১৩শ’ কেজি। প্রতিদিন ১৪ কেজি খাবার খাওয়ানো হয়। উচ্চতা সাড়ে ৬ ফুট ও লম্বায় ৯ ফুট। ২ বছর আগে আড়াই লাখ টাকায় কিনেছিলাম। অনেকেই দেখছেন তবে দামদরে মিলছে না। দাম চাচ্ছি ১৪ লাখ। সুইডেন প্রবাসী এক ক্রেতা ৭লাখ টাকা বলেছে। তবে ৯ লাখ হলে ছেড়ে দিব।
হাটের আহŸায়ক কাউন্সিলর সামসুজ্জামান মিয়া স্বপন জানান, হাট শুরু থেকে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত গরু বিক্রি হয়েছে সর্বমোট ২৭৩টি। আর শুধু আজকে এ পর্যন্ত ৮৩টি গরু বিক্রি হয়েছে। আর হাটের হাসিল আদায় হয়েছে সর্বমোট ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭শ’ ১০টাকা। পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু এসে গেছে হাটে। আমাদের হাটে গরু বিক্রি হয় শেষ দু’দিন। সেই হিসেবে এ পর্যন্ত ভালোই বিক্রি হয়েছে।