দেশ থেকে ডলার পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান রোধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বুধবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-অর্থ পাচার, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ হিসাবে বৈধভাবে বিদেশ থেকে স্বর্ণ আমদানি কমানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। জানা যায়, একটি চক্র পাচারের কাজে ঘনঘন বিদেশ যায়। এদের পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়, বিদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রমও নেই। এমনকি বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণে তাদের নিজস্ব কোনো বিনিয়োগও নেই। মূলত শক্তিশালী গডফাদার চক্রের সহায়তায় তারা ক্যারিয়ার হিসাবে ঘনঘন বিদেশে যাওয়ার নামে দেশ থেকে নগদ ডলার পাচার করছে। প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স নিয়ে স্বর্ণ কিনে দেশে আনছে। সেই স্বর্ণ বিক্রির টাকায় ডলার কিনে ফের বিদেশ যাচ্ছে। সরকার এসব বন্ধে ঘনঘন বিদেশ সফরকারীদের তালিকা তৈরি শুরু করেছে। টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে কেউ যাতে বিদেশ সফর করতে না পারে, সেজন্য এ চক্রের একটি তালিকা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোয় পাঠানো হয়েছে। তাদের আটক বা গ্রেফতারের পর বের করা হবে গডফাদারদের নাম।
ডলার পাচার, অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা এবং স্বর্ণ চোরাচালাানের লাগাম টানা জরুরি। জানা যায়, এ ব্যাপারে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের চারটি সার্ভিল্যান্স টিম গঠন করেছে। আশা করা যায়, এ উদ্যোগ সফল হলে একদিকে দেশ থেকে ডলার পাচার ও স্বর্ণের চোরাচালান বন্ধ হবে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে, অন্যদিকে দেশে নগদ ডলারের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। এতে কেটে যাবে চলমান তীব্র ডলার সংকট। দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে ডলার পাচারের ঘটনা অনেকদিন ধরেই ঘটছে। কালোটাকা সাদা করতে অবৈধ পথে ডলারের বিনিময়ে স্বর্ণ আনছেন গডফাদাররা। কখনো কখনো বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চুনোপুঁটিদের ধরলেও রাঘববোয়ালরা থেকে যায় অধরা। আসলে শিকড় না উপড়ে ফেলে ডালপালা ছাঁটলে দুর্নীতি-বৃক্ষের কোনো ক্ষতিই হয় না। অর্থ পাচার, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধের পাশাপাশি এর পেছনে জড়িত গডফাদারদেরও তাই আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা গডফাদারদের কালোটাকার অন্ধকারে দিগভ্রান্ত না হয়ে সাফল্যের আলো দেখবে, এটাই প্রত্যাশা।