
জি এম ফিরোজ, ডুমুরিয়া : ডুমুরিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ কর্তৃক জোর পূর্বক গাছপালা কাটা এবং তেতুল চুরি করে পেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খর্ণিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় ভূক্তিভোগী জমির মালিক আব্দুস সালাম সরদার বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন।
থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগ এবং শুক্রবার সকালে সরেজমিনে যেয়ে এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খর্ণিয়া গ্রামের পশুচিকিৎসক সহকারি আব্দুস সালাম সরদারের পৈত্রিক ওয়ারেশ ও ভোগদখলীয় সূত্রে খর্ণিয়া মৌজার মোট ১.১২ একর ডাঙ্গা শ্রেনির জমির মধ্যে ০.২৮ একর জমি দীর্ঘ ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে ভোগ দখলে আছেন। কিন্ত তার ভোগদখলীয় জমির কিছু অংশ নিজেদের দাবী করে প্রতিবেশী সাহাবুদ্দিন সরদার ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে বেআইনীভাবে জমিতে থাকা গাছ পালা কেটে ফেলা, নারকেল, কলা, গাছ থেকে তেঁতুল পেড়ে নেয়াসহ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিসাধন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৫ এপ্রিল তারিখ বিকেলে জমিতে থাকা একটি মূল্যবান পিত্তিরাজ গাছ সাহাবুদ্দিন গংরা ডালপালা কেটে নেয়াসহ গাছের গোড়ার কিছু অংশ কেটে ক্ষতি সাধন করেছে। এছাড়া ইতোপূর্বে গত ১৫ মার্চ তারিখে আব্দুস সালামের লোকজন গাছ থেকে তেতুল পাড়তে গেলে সাহাবুদ্দিন গং তাদের কে নানাবিধ হুমকি ধামকি, ভয়ভীতি দিয়ে গাছ থেকে নামতে বাধ্য করে এবং পরবর্তিতে গাছের সমুদয় তেতুল চুরি করে পেড়ে নিয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে আব্দুস সালাম বলেন, আমার গাছের তেঁতুল পাড়া নিয়ে বাধা সৃষ্টির কারণে ১৫ মার্চ তারিখে সাহাবুদ্দিন সরদার ও তার সহযোগী কালাম সরদার, রবিউল সরদার, সাহেলা খাতুন ও মোস্তাক সরদারকে বিবাদী করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশের এসআই মুহা শাহিনুর রহমান গত ১ রমজান সরেজমিনে তদন্ত করে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোন আইনগত পদক্ষেপ না নেয়ায় আমার প্রতিপক্ষরা গাছ কাটাসহ আরো বেশি ক্ষতিসাধনে উঠে পড়ে লেগেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে সাহাবুদ্দিন সরদারের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব না হলেও স্থানীয় খর্ণিয়া ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ হযরত আলী বলেন, আব্দুস সালাম ও সাহাবুদ্দিন এর মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ এবং গাছ পালা কাটার বিষয়টি আমি জেনেছি। এ নিয়ে সাহাবুদ্দিন বলছে তারা নাকি জমি মেপে দেখেছে সালামের জমির মধ্যে কিছু জমি তারা পাবে।তাই তারা গাছ কাটছে।তাই বিষয়টি নিয়ে আমি উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখতে আসন্ন ইদুল ফেতেরের পর উভয়পক্ষের নিযুক্ত সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করে দেখে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছি।
এ প্রসঙ্গে অভিযোগের তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মুহা শাহিনুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছেন। বিষয়টি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ হওয়ায় এবং তেতুল গাছের প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত হতে না পারায় তদন্ত কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। তবে গাছ কাটার বিষয়ে কোন অভিযোগ তার জানা নেই বলে জানান।