শেখ মাহাতাব হোসেন, ডুমুরিয়া : খুলনার ডুমুরিয়ায় এ যেন হলুদের রাজ্য। সূর্য যখন যেদিকে হেলছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ছে। চারদিকে হলুদ ফুলের মনমাতানো রূপ। ডুমুরিয়ায় কালিকাপুর দিন-দিন জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন বিভিন্ন এলাকায় সরোজমিনে গিয়ে দেখা সবুজ গাছের ফাঁকে-ফাঁকে শোভা পাচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি। চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী চাষ করে অধিক লাভের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী ফুলের এ অপরূপ দৃশ্য দেখতে ছেলে মেয়েরা ছুটে আসে জমিতে। ব্যস্ত হয়ে সূর্যমুখীর সাথে ফটো সেশন করতে ভির করছে পথচারীসহ এলাকাবাসী।
উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের সূর্যমুখী ফুল সাইকুল ইসলাম মোড়ল জানান, কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আমি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। অশাকরি, অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাবো। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সূর্যমুখী ফুল থেকে অধিক ভাবে লাভবান হওয়া যাবে। প্রতি বছর ৩৩ শতক জমিতে এ ফুল চাষ করে থাকি এবং কৃষি অফিস বীজের পাশাপাশি সার কীটনাশকও সরবারহ করে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩৩৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। আসামিতে এর চেয়ে আরও বেশি চাষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে আশা করছি। ডুমুরিয়ার লবণাক্ত পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষে সফলতা এসেছে। স্বল্প খরচে বাম্পার ফলনে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। আমন মৌসুমে ধান লাগানোর পর জমিগুলো পড়ে থাকতো। সেসব জমিতে কৃষি প্রণোদনার সহযোগিতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। ফসলও ভালো হয়েছে। এ চাষে ভালো ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মধ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, এতে অনাবাদী জমির পরিমাণ কমার পাশাপাশি পূরণ হবে স্থানীয় সূর্যমুখী তেলের চাহিদা। ডুমুরিয়ায় সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে-সঙ্গে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। ডুমুরিয়ায় লবণাক্ত পতিত জমিতে হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফলতা এসেছে।
মোহাম্মদ নামের এক চাষী বলেন, আমি৩বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। ৫/৬ বছর ধরে লবণাক্ত এ জমি পড়ে থাকতো। আমন ধান ছাড়া আর কোনো ফসল এখানে হতো না। কৃষি অফিস থেকে সূর্যমুখী ফুল চাষের পরামর্শ দেয়। তারাই জমির চাষাবাদের সার ও বীজ দিয়েছে। ফলন ভালো দেখে এখন আশপাশের অনেক কৃষকই সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সূর্যমুখী চাষে সফলতা দেখে অন্য কৃষকেরা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সূর্যমুখী চাষ ভোজ্যতেলের নির্ভরতা কমিয়ে হতে পারে আসামির অর্থকারী ফসল।