
শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া(খুলনা): খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকেরা লাউ চাষে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছেন। কাচনাপাড়া ও আশপাশের গ্রামের কৃষকেরা অল্প পরিশ্রম, সীমিত জমি ও কম খরচে বিষমুক্ত লাউ চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
ডুমুরিয়ার চটচটিয়া গ্রামের কৃষক নানক মণ্ডল ইউনাইটেড সিড কোম্পানির ‘গরিমা’ নামের হাইব্রিড লাউ চাষ করে লাখপতি হয়েছেন। নিজস্ব জমি না থাকায় তিনি প্রতিবেশীর ঘেরের আইলে ৫ বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। মাত্র ১৬ হাজার টাকা খরচে ৩০০টি লাউগাছ লাগিয়ে তিন মাসে প্রায় ২ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন, সঠিক পরিচর্যা করলে আরও লক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি সম্ভব হবে।
নানক মণ্ডল জানান, কম শ্রম, অল্প পুঁজি ও সীমিত জমিতেই লাউ চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিনি কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করেননি। কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি বিভিন্ন জৈব বালাইনাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত লাউ চাষ করেছেন। তার এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অনেক বেকার যুবক লাউসহ অন্যান্য সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি তিনি ১০ শতক জমিতে বরবটি চাষ করে আরও প্রায় ১ লাখ টাকার আয় আশা করছেন। লাউ চাষী সাধন আরো জানান আমি বিষমুক্ত লাউ চাষ করে সফলতা পেয়েছি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিষমুক্ত লাউয়ের বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী লাউয়ে রয়েছে প্রায় ২৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। এছাড়া লাউয়ে সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার থাকে, যা শরীর ঠাণ্ডা রাখে এবং এটি সুগার-ফ্রি হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
কাচনাপাড়া গ্রামের অধিকাংশ পরিবার এখন লাউ চাষে স্বাবলম্বী। কৃষকেরা আশা করছেন, এ বছর শুধু এ গ্রাম থেকেই প্রায় ১০ লাখ টাকার লাউ বিক্রি হবে। বর্তমানে ডুমুরিয়ার বিষমুক্ত সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

