
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার ডুমুরিয়ার মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে কমিটির দু’জন সদস্য সোমবার যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষে
গত ১জুলাই তারিখে অভিভাবকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরীর সদস্য নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেব ডুমুরিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এস,এম কামরুজ্জামান কে দায়ীত্ব প্রদান করা হয়।”বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যানেজিং কমিটি বিধিমালা’২৪ এর বিধান অনুযায়ী গত ৭ জুলাই তারিখে প্রিজাইডিং অফিসার তার নিজ কার্যালয়ে কমিটির সভাপতি নির্বাচনের দিন ধার্য করে সভা আহ্ববান করেন।
ধায্যকৃত দিনে কমিটির বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৯জন সদস্যের মধ্যে ৮জন সদস্য উপস্হিত হলেও কমিটির দাতা শ্রেনির সদস্য মোঃ মকবুল হোসেন বিশ্বাস দীর্ঘদিন শারীরিক ভাবে অসুস্হ হয়ে শয্যাশায়ী থাকায় তিনি সভায় অনুপস্হিত থাকেন।প্রিজাইডিং অফিসার উপস্হিত ৮ জন সদস্যের মধ্যে সভাপতি হিসেবে নাম প্রস্তাবের আহ্বান করলে এক পক্ষ উপজেলার আঠারো মাইল এলাকায় অবস্হিত সৈয়দ ঈসা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ এ অফিস সহকারী হিসেবে এমপিও ভূক্ত কর্মচারী (যার এমপিও ইনডেক্স নাম্বার ৩০০৭২০২) সুরঞ্জন কুমার ঘোষ অপর দিকে রোকসানা আক্তার নামে একজন নারীর
নাম প্রস্তাব ও সমর্থিত হওয়ায় দুই প্রার্থীর মধ্যে গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্হিত সদস্যদের মধ্যে থেকে সুরঞ্জন কুমার ঘোষ একজন সরকারি বেতন-ভাতা ভূক্ত তৃতীয় শ্রেনির কলেজ কর্মচারী হওয়ায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে তার প্রার্থীতার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে প্রিজাইডিং অফিসার তাদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ভোট গ্রহন করেন। এতে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বি দু’জন প্রার্থী সমান সংখ্যক অর্থাৎ ৪+৪ ভোট পান।
এ সময় প্রিজাইডিং অফিসার বিধি মোতাবেক লাটারীর মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না করে
অনুপস্হিত ভোটার মোঃ মোকবুল হোসেন বিশ্বাসের ভোট তার বাড়িতে যেয়ে গ্রহনের পায়তারা করেন।এক পর্যায়ে তিনি তাতে ব্যর্থ হয়ে
ভোটে ‘কাম্য সংখ্যক’ সদস্যের অনুপস্হিতিসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম স্হগিত রাখেন।
বিষয়টি অভিযোগ কারীদ্বয় জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি বিধি মোতাবেক প্রিজাইডিং অফিসারকে সভাপতি নির্বাচনের ব্যবস্হা গ্রহনের নির্দেশ দেন।এক পর্যায়ে প্রিজাইডিং অফিসার স্হগিত সভাপতি নির্বাচন সম্পন্ন করতে গত ১১ জুলাই তারিখে পুনরায় তার কার্যালয়ে সভা আহ্বান করেন।
এ দিনও কমিটির দাতা শ্রেনির সদস্য মোঃ মোকবুল হোসেন বিশ্বাস অনুপস্হিত থাকেন।এক পর্যায়ে প্রিজাইডিং অফিসার গোপন ব্যালটে উপস্হিত ৮ জন সদস্যের ভোট গ্রহন করে ফলাফল ঘোষণা না করে ব্যালট পেপারগুলো নিজ জিম্মায় রেখে উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মাগুরাঘোনা গ্রামে নিজে স্বশরীরে উপস্হিত হয়ে অসুস্হ সদস্যের ভোট গ্রহন করে নিজ কার্যালয়ে এসে ফলাফল ঘোষণা করেন।
এতে সুরঞ্জন কুমার ঘোষ কে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী সদস্য মোঃ মফিজুল ইসলাম শেখ ও শওকত মোড়ল বলেন,’আমাদের আপত্তি থাকা সত্বেও সরকারি বেতন/ভাতা ভূক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেনির একজন কর্মচারীকে কমিটির সভাপতি নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়া এবং কমিটির অনুপস্হিত সদস্যের বাড়ীতে যেয়ে তার ভোট গ্রহন করে ভোটের ফলাফল ঘোষনা করা বিধি মোতাবেক অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। প্রিজাইডিং অফিসার পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে এমন বিধি বহির্ভূত কাজ করেছেন বলে আমারা মনে করি। যে কারণে
অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির সভাপতি পদ অনুমোদন প্রদান না করার জন্যে আমরা দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার এস,এম কামরুজ্জান বলেন,বিধি মোতাবেক ম্যানেজিং কমিটির সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগটি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক পরবর্তি ব্যবস্হা নেয়া হবে।