তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালায় ৬০ বছর ধরে অবৈধ দখলে থাকা প্রায় ৩৪বিঘা সরকারি জমি উদ্ধার করা হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবার বেদখল হয়ে গেছে। অবৈধ দখলদাররা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে।
খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন তালা উপজেলার মির্জাপুর নামক স্থানে ১১ দশমিক ২৬ একর (প্রায় ৩৪ বিঘা) সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। গত ২৩ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা ভূমি অফিস এবং পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে এসব জমি উদ্ধার করেন।
সূত্র জানায়, ৩০ কোটি টাকা মূল্যমানের জায়গাটি স্থানীয় একটি চক্র ৫০-৬০বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে ভোগ করে আসছিল। বিষয়টি তৎকালীন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনের চোখে পড়লে অবৈধ দখলে থাকা এই বিপুল পরিমাণ খাস জায়গা উদ্ধার করার উদ্যোগ নেন। পরে তিনি বিষয়টি সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং উপজেলার প্রাক্তন নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিনকে অবহিত করলে তারা সহকারী কমিশনার ভূমি-কে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করার জন্যে নির্দেশনা প্রদান করেন।
ভূমি অফিস সূত্র জানায়, ১৯৬০ থেকে ১৯৬২সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে উক্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়। অধিগ্রহণের পর থেকে অবৈধ দখলদাররা উক্ত জমি দখল করে রেখেছিল। বিগত সরকারের শেষ দিকে এক অভিযানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে থাকা ১১ দশমিক ২৬ একর জমির পুরোটাই উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া জায়গাটিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে লাল ফ্লাগ দিয়ে যায়গাটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপরও যদি অবৈধভাবে কেউ এ জায়গায় প্রবেশ বা দখল করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু প্রশাসনের সেই কথার তোয়াক্কা না করে দখলদাররা তাদের জমি আবার দখল করে নিয়েছে।
স্থানীয় সাধন ঘোষ, মোফাজ্জল চৌকিদার, অপূর্ব ঘোষ, আমজেদ, দিনেষ ঘোষসহ ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে সরকারি এই উচ্চ মূল্যের খাস জমি ভোগদখল করে আসছে। সেখানে বর্তমানে আমন ধানের চাষ করা আছে।
একাধিক অবৈধ দখলদার বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি বিধায় দখল করে খাচ্ছি। আর সরকার চাইলে আমরা ছেড়ে দেবো। তবে অনেকে ইতিমধ্যে বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেছেন।
তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, আমি বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তবে কেউ সেখানে অবৈধ পন্থায় জবরদখল করে ভোগদখল করতে পারবে না।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল বলেন, আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে নির্দেশনা দিয়েছি অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জন্য। এছাড়া কৃষি খাস জমি আইন অনুযায়ী যারা প্রকৃত দাবীদার তাদের বন্দোবস্ত দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।
তালায় আবারও বেদখল সরকারি ৩৪ বিঘা খাস জমি!
Leave a comment