তালা প্রতিনিধি : বৈশাখের কাঠফাঁটা রোদ আর তীব্র গরমে মানুষ যখন তৃষ্ণায় হাঁসফাস করছে ঠিক সেই সময় ১০টাকায এক গ্লাস তালের রস পান করে পথচারীরা তাদের পিপাসা মিটাচ্ছেন। আর অন্য দিকে তালের রস বিক্রেতা দেবদাশ তার সংসারের হাল ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা হতে দলুয়া সড়কের কাটাখালী জামতলা নামক স্থানে তালের রস খাওয়ার জন্য পিপাসায় কাতর পথচারীরা লাইন দিয়ে রস খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। মাত্র ১০টাকায় মিলছে এক গ্লাস তালের রস। কথা হয় রস বিক্রেতা দেবদাশের সঙ্গে।
মোকছেদপুর গ্রামের দেবদাশ জানান, তাল গাছ কাটতে গেলে কোন সময় অসময় নেই। কাঠফাঁটা দুপুরে আবার সন্ধ্যায় ও সকালে ৩বার গাছে উঠতে হয়। অনেক কষ্ট করে এই রস সংগ্রহ করতে হয়। তারপর আমরা রস নিয়ে রাস্তায় এই পথচারীদের কাছে বিক্রি করি। তবে গত ২/৩ বছর পূর্বে এই রস বিক্রি হতো ৫টাকা গ্লাস, সেটা এখন ১০টাকা কেন ? জানতে চাইলে রস বিক্রেতা দেবদাশ জানান, এক কেজি চাল ৭০টাকা, তাছাড়া তরিতরকারির যে দাম সেটা তো আমার চেয়ে আপনি বেশি জানেন। তবে এই গ্রীষ্মকালে বৈশাখ মাসে তাদের এই মৌসুম শুরু হয়। আর এই রস ২/৩ মাস ধরে বিক্রি হয়।
স্থানীয় বেলাল হোসেন জানান, তালের রস খুবই ভালো। আর এই রস খেয়ে ভালো ঘুম হয়।
রস খেতে যাওয়া মহিলা রিজিয়া খাতুন জানান, অনেক দিন তালের রস খাইনি। তাই রাস্তায় রস দেখে ভ্যান থেকে নেমে পিপাসা মিটিয়ে নিলাম। এই মৌসুমে এই সড়কে ৪/৫জন লোক গাছের ছায়ায় বসে ভাড় নিয়ে ও ওয়ান টাইম গ্লাসে করে এই রস বিক্রি করতে দেখা যায়। তাছাড়া বিশেষ করে বর্তমান ধান কাটার মৌসুমেও কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানির জন্য আহাকার করে। তখন রাস্তায় মেলে এই তালের রস। এই রস খেয়ে কৃষকরাও তাদের পিপাসা মিটাচ্ছেন।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার হাজিরা খাতুন, তালের রস শ্লেষ্মানাশক। এটি মূত্রকর, প্রদাহ ও কোষ্ঠাঠিন্য নিবারণ করে। তালের রস থেকে তৈরি তালমিছরি সর্দি কাশির মহৌষধ, যকৃতের দোষ নিবারক ও পিত্তনাশক হিসেবে কাজ করে। তালে থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা হাড় ও দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে।
তালায় ১০টাকায় মিলছে এক গ্লাস তালের রস

Leave a comment