
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : বড় হয়ে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়া, এই দু’বেলা দু’মুঠো খেতে না পাওয়া, চিকিৎসা না পাওয়া, সুপেয় পানির অভাবগ্রস্থ মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করিস। তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে সচেষ্ট থাকবি, আজীবন– পিতামহের এমনই মর্ম কথা নিত্যদিন যাকে পীড়িত করতো , এখনও করছে। পাইকগাছা-কয়রা’র এপ্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটে চলেছেন তিনি হলেন প্রকৌশলী প্রেম কুমার মন্ডল। এই ছেলেটির জন্ম এক্কেবারে সুন্দরবন সংলগ্ন শিবসার উপকূলে
এক অজোপাড়াগায়ের বনেদী পরিবারে। পিতা-পিতামহ রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তাই রক্তের প্রবাহ মিশে গেছে রাজনীতি। পিতামহের কাছে রাজনীতির হাতে খড়ি। মননে এঁকে দিয়েছিলেন, ছোট বেলাতে।
গ্রামের পাঠশালা হয়ে সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে চুয়েট এ যন্ত্রকৌশল এ স্নাতক। রাজনীতির হাতেখড়ি ওখানেই বলা যায়। চুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের হাত ধরে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক। চুয়েট ছাত্রলীগের এ্যলোমনাই এসোসিয়েশনের এবং বর্তমানে খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এসব সিঁড়ি পার করতে সহধর্মীনির দারুণ সহযোগিতা ছিলো সবসময়। সাম্প্রতিককালে দেখা যায় নিজ কে জাহির করে জনগণের সামনে নেতা বলে হাজির করানো হয়। নেতা তৈরির পিছনে কোনও পরিকল্পনা থাকে না ক্ষমতাশালীর। ব্যবসায়িক সম্মৃদ্ধিবানরা বর্তমানে নেতা বনে যাচ্ছেন। বিপরীতে প্রেম কুমার তৃণমূলস্তরের মানুষের সংশ্রব-সংস্পর্শ থেকে উঠে আসা নেতা। কয়রা-পাইকগাছা উপজেলাতে মোট ৩৪৩ টা গ্রাম। গত দশ বছরে সে প্রায় সব গ্রামে পায়ে হেঁটে মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেছে, আড্ডা দিয়েছে। নেতা নয়, গণমানুষের একজন হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, বয়স্ক অনেক পুরোনো নেতাদের চেয়ে এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন তিনি। নিজেকে ভেঙেচুরে গড়তে হয়েছে। বর্তমানের প্রেম কুমার হয়ে ওঠার লড়াই টা বেশ কঠিন ই ছিলো। নিজ হাতে নিষ্ঠুর ভাবে নিজের পরিবর্তন করেছে। আমিত্বে ঘোরাফেরা নেই। নিজের ছোট্ট সন্তান, ঘরের স্ত্রীকে যথেষ্ট সময় না দিয়ে কয়রা-পাইকগাছাবাসির জন্য সময় দিয়ে সেবা করার এক মহান ব্রত বেছে নিয়েছে। নিজ পরিবার নিয়ে আত্মব্যাপৃত হয়ে পড়েনি।
এখন অবধি পরিশীলিত বাচনভঙ্গি, ধর্মকে দূরে রেখে মাঠের রাজনীতি আর জনতার দৈনন্দিন ইস্যু নিয়ে লড়ছে, সেটা ভালো ব্যাপার। পরিমিত আবেগ, নিয়ন্ত্রিত পরিশ্রম, আর সর্বদা একটা তীব্রতম উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার আছে বা ছিলোই। রাজনীতিতে অবান্তর হয়ে যাওয়া একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সেটাকে পিছনে ফেলে দিয়ে তরতর করে এগিয়ে চলেছে।
বয়স কম হওয়াতে জেলা কমিটির বর্ষীয়ান নেতারা বারবার কটাক্ষ করতে চেয়েছেন, দাবিয়ে রাখতে চেয়েছেন, হীনমন্যতার ঘোরে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছেন, ওই বর্ষীয়ানরা। কিন্তু কথায় আছে না, ওল বড়ো হলে মাটি আপনিই ফাটবে। দলীয় অভ্যন্তরীণ রাজনীতির আকাশে মেঘের ঘনঘটা ছিলোই। মেঘ সরাতে হয়েছে নিজেকে। আজ আকাশে মেঘ নেই, তাই চাঁদ (প্রেম কুমার) কে সবাই দেখতে পাচ্ছে। এতদিনের ত্যাগ তিতিক্ষা ফল পেতে, অসহায় মানুষদের বড় ধরনের সহযোগিতা করতে, তাদের মাঝে আরো নিজেকে সম্পৃক্ত করতে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদে
দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছে।
বাগ্মীতায় ভরপুর। খুলনা জেলা পরিষদের এক সভায় এক ব্যবসায়ী-নেতা বলেছিলেন, ”ছোট ভাই প্রেম, তুমি একাই তো টানা ৪৫ মিনিট ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখলে, বাকিদের আর বলার মতো কিছু রাখলে না তো!”
চেতনায় লিবারেল ডমিনেন্স। বন্ধ্যা এ সময়ে এলাকায় সাংস্কৃতিক জাগরণে অনেক কাজ করে চলেছে প্রেম কুমার। ন্যায়বোধের পক্ষে বরাবরই উচ্চকিত সে। দলীয় অভ্যন্তরীণ এক সভাশেষে বর্তমান হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস একবার প্রেম কুমার কে বলেছিলেন,”ভাইডি, সত্যকে তুমি এভাবে সামনে আনলে, সাহসী এসব উচ্চারণ করতে পারলে, ধন্যবাদ তোমাকে।” সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন।বঞ্চিত-শোষিত-আর্তপীড়িতের, গণমানুষের মসীহা হয়ে ওঠো, এ আশা করি। সদ্য ফোঁটা ফুল যেমন সকালের বাতাস দ্বারা হর্ষিত হয়, নব জাগরণ ঘটিয়ে রাজনীতিকে তেমন আবহ দাও। মানুষের মুখাবয়বে উচ্ছাসের হাসি ফোটাও, জনগণ কৃষ্ণপক্ষের নিঝুম ঘন রাত পার করুক। রাজনীতিতে মেধাবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরী। দেশের মেধাবী তরুণদের একাংশ বিসিএস নিয়ে আকৃষ্ট আর এক অংশ বিদেশ গিয়ে সেটেল করছে। মেধার গোরস্থান হয়েছে এ দেশ। ভোগবাদী কৃষ্টি আমাদের গ্রাস করেছে। একটা ভলো সমাজ গড়তে মেধা, শ্রম, সাধনা, দক্ষতা আত্মোৎসর্গ প্রয়োজন। এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল তরুণ মেধাবীদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ; নিঃসন্দেহে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র নীতি ও আদর্শের উদ্বুদ্ধ হয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা ৬ (পাইকগাছা কয়রা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেমকুমার মন্ডল বলেন, দেশের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই। দেশবিরোধী কোন অপরাজনীতির চক্রান্ত, অপপ্রচারে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আওয়ামী লীগের হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ। তিনি সকলের আশীর্বাদ, দোয়া কামনা করেছেন ।

