
আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল,দশমিনা(পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাণিজ্যিকভাবে পানের চাষাবাদ করে প্রায় ৩ শতাধিক পান চাষীর মুখে হাসি ফুটেছে। একটি পানের বরজ থাকলেই সারা বছরের বাজার খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। উৎপাদন খরচ কম এবং লাভও বেশি। তাই বছরের পর বছর বংশ পরস্পরায় পান চাষ করেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আবাদি অনাবাদি ও পতিত জমিতে পান চাষে কৃষক-কৃষানিদের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে। একদিকে যেমন চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীন অর্থনীতি, অন্যদিকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার প্রান্তিক কৃষক পরিবার। বর্তমানে হাট-বাজারে পানের দাম ও চাহিদা খুব বেশি। তাই অন্য ফসলের তুলনায় পান চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেকেই পান চাষে ঝুঁকে পড়ছে। উপজেলায় পানের হাটে পানের ব্যবসা জমে উঠেছে।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক পানের বরজ রয়েছে। এই সব এলাকার উৎপাদিত পান দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। উপজেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক পরিবার শুধুমাত্র পান চাষ করে স্বালম্বী হয়ে উঠছেন। তাদের অনেকেই শ্রম ও অধ্যবসায়কে কাজে লাগিয়ে পান চাষ করে নিজেদের ভাগ্য পাল্টে ফেলেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ২ একর জমিতে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক পানের বরজ রয়েছে। প্রতি একর জমিতে পানের উৎপাদন ব্যয় হয় গড়ে প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা। আর পান বিক্রি করে আয় হয় ৭-৮লাখ টাকা।
উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের পান চাষি সমির বাড়ৈই বলেন, দীর্ঘ ১৭-১৮ বছর যাবৎ আমি পানের বরজের ব্যবসা করে আসছি। এই বছরও প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ করে নতুন আরেকটি পানের বরজ করেছি। বরজ করতে খরচ কম আর লাভ বেশি। আমাদের এলাকায় প্রায় মানুষ পানের বরজ করে আসছে। একই এলাকার অন্য পান চাষি সুখরঞ্জন মিত্র বলেন, ছোটবেলা থেকেই পান চাষের সাথে জড়িত। পান চাষ তুলনামূলক লাভের দিকটাই বেশি। কেননা পান চাষের এক মাস থেকে দেড় মাসের মধ্যে বরজের পান বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠে। বর্ষার মৌসুমে পানের উৎপাদন একটু বেশি হয়। এই জন্য খুব একটা কাজের লোক রাখতে হয় না। শুধুমাত্র নিজেরাই নিজেদের কাজ করতে পানের বরজে। প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হয়। এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাফর আহমেদ বলেন, কৃষকরা পান চাষে দিন দিন আগ্রহ বেড়ে গেছে। বাজারে বর্তমানে দামও ভালো পাচ্ছেন।