আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল, দশমিনা(পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার মধ্যে একটি সেতুর অভাবে ২ উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটি সেতুর জন্য অপেক্ষায় কেটেছে প্রায় ৫৪ বছর। অথচ কেউ কথা রাখেনি। চাঁদপুরা-গুয়াবাঁশবাড়িয়া খালে সেতু আজও নির্মান হয়নি। আর সেতু না হওয়ার কষ্টে রয়েছেন পটুয়াখালীর দশমিনা-গলাচিপা উপজেলার পাঁচ গ্রামের প্রায় ২৮ হাজার মানুষ। দুর্ভোগ নিয়েই এলাকাবাসী বর্ষাকালে নৌকায় আর শুস্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এই খাল পারাপার হচ্ছে মানুষ। সেতু না হওয়ার কারণে বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়া-বাঁশবাড়িয়া এলাকার রাস্তাসহ অন্য কোন উন্নয়নও তেমন হয়নি। এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ সাঈদুল ইসলাম মোহন খাঁন। উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের খালের দক্ষিন পাশের চাঁদপুরা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তার মতো হাজারো মানুষের দাবি এই খালের উপরে একটি সেতু নির্মানের।
সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুরা-গুয়াবাঁশবাড়িয়া গ্রামের খালে বাঁশের সাঁকো উঁচু-নিচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ ও রোগীদের পারাপারে দুর্ভোগের শেষ নেই। নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ। খালের উত্তর পাশের জাফর হোসেন, জামাল মিয়া ও শাহ আলম গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়া-বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা তারা। তারা জানান, চাঁদপুরা-গুয়া বাঁশবাড়িয়া খালে দীর্ঘদিন যাবৎ সেতু না থাকায় তাদের গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। ছেলে মেয়েদের স্কুুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে হয় দূর্ভোগ করে। ভরা বর্ষায় খেয়ার নৌকায় ও শুকনোয় মৌসুমে বাঁশের সাঁকো পার হতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দশমিনা- গলাচিপা দুটি উপজেলা নিয়ে একটি আসন আমরা বর্তমান সংসদ সদস্য এস.এম.শাহজাদা এমপি স্যারে কাছে বলবো যাহাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ব্রিজটি নির্মানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করেন। আলীপুরার স্লুইজ বাজারের বাসিন্দা হাবিব বলেন,এই এলাকা কৃষি প্রধান এলাকা। গ্রামের মানুষ, তাদের খেতের ফসল পারাপার এবং জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ সেতুটির অভাবে। তা ছাড়া দুই উপজেলার পাঁচ গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে আনতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেতু না থাকায় স্কুল -কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রায় সময় বিপাকে পরে এবং শিক্ষার্থীর বাবা-মা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে দুঃচিন্তার প্রহর গুনে থাকে। ঐ এলাকার বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, সকল পিতা-মাতা স্বপ্ন দেখেন সন্তান লেখাপড়া করে শিক্ষিত হয়ে অনেক বড় চাকুরি করবে কিন্তু পাঁচ গ্রামের বাবা-মা সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দুঃচিন্তায় থাকেন তাই অনেক সন্তান শিক্ষা থেকে হয় বঞ্চিত। তাই অনেক বাবা- মা তাদের সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে নিরক্ষর রাখছেন। সেতুর অভাবে সিংহভাগ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে। সেতু না থাকায় মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। দুই ইউনিয়নের জনসাধারনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্রিজটি নির্মান করা প্রয়োজন।
দশমিনায় বাঁশের সাঁকোতে দুই উপজেলার বাসিন্দারা সীমাহীন দূর্ভোগে

Leave a comment