বিধান চন্দ্র ঘোষ, দাকোপ : অতিথি পাখির আগমনে খুলনার দাকোপে স্থানীয় অসাধু শিকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা পাখির নকল ডাকের ফাঁদে ফেলেসহ নানা কৌশলে অসংখ্য পাখি শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেয়া খরিদ্দারদের কাছে অবাধে বিক্রিও করছে শিকারীরা।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বারের ন্যায় এবারও নভেম্বর মাসে শীতের শুরুতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের খাল বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসছে। পাখির কলকাকলীতে এ অঞ্চলের ছোট ছোট বিল ঝিলগুলো হয়ে উঠছে মুখরিত। পাখির কিচির মিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তুলছে আরও প্রানবন্ধব। কিন্তু স্থানীয় পেশাদার অসাধু শিকারীরা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা পাখির নকল ডাকের ফাঁদে ফেলে অবাধে শিকার করে চলেছে আসল অতিথি পাখি। এছাড়া তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের খাল, বিল, নদী ও মাঠ থেকে নাইলনের সুতার তৈরি ফাঁদে ও চোখে আলো ফেলে, কেঁচো দিয়ে বশি পেতে, কোচ মেরে ও কারেট জাল পেতেও পাখি শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেয়া খরিদ্দারদের কাছে অবাধে বিক্রিও করছে শিকারীরা। এসব শিকারীদের কাছ থেকে আবার এলাকার কতিপয় ব্যক্তি পুলিশের ভয়ে দেখিয়ে অর্থ বানিজ্যও করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, প্রচন্ড শীতের প্রকোপ থেকে আত্মরক্ষার্থে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে অতিথি পাখি এ অঞ্চলে আসে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালী কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদা খোচা, ডংকুর, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। ৮০ দশকে এদেশে আসা অতিথি পাখির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩০০ প্রজাতির। কিন্তু বর্তমানে এ সংখ্যা নেমে ৬০ থেকে ৭০ চলে এসেছে। প্রশাসন তৎপর হলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এসব পাখি শিকার বন্দো হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শিকারী জানান, প্রতি রাতে ধান ক্ষেতে বসে মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা পাখির নকল ডাক অথবা নকল সুর মিলানো বাঁশি বাজিয়ে আসল উড়ন্ত পাখিদের নিচে নামিয়ে ফাঁদে ফেলে অতি সহজে শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেওয়া খরিদ্দারদের কাছে পাখি প্রতি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রিও করছে শিকারীরা।
এব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল জানান, অতিথি পাখি শিকার বন্দে আমারা প্রসাশনের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া শুরু করেছি। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়েও কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করছি। তা ছাড়া সঠিক খোঁজ খবর পেলে আমরা সেখানে গিয়ে অভিযান পারিচালনা করে শিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
দাকোপে অতিথি পাখি শিকারীরা বেপরোয়া
Leave a comment