সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর: সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তি দেবহাটা উপজেলার চর-বালিথা থেকে বহেরার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা ভেঙে চলে যাচ্ছে কলকাতার খালে। ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তাটি ভাঙলেই প্লাবিত হবে অন্তুত একডজন গ্রাম।
কলকাতার খাল! হ্যা এই কলকাতার খালই ছিল ওপার বাংলার জলপথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। সেই কলকাতার খালের দুই পাশ দিয়ে চলে গেছে এলজিইডি’র রাস্তা। সম্প্রতি কলকাতার খালের সংযোগস্থলে দেয়া হয়েছে আড়াআড়ি বাঁধ। যার ফলে উপজেলার সড়কটির বহু জায়গা ভেঙে তলিয়ে গেছে খালে। ফলে গোটা এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিরঞ্জন সরকার (৬৯)।
শশাডাঙ্গা গ্রামের মাজেদ গাজী বলেন, এই সড়কটি ভাঙলে তিন উপজেলার যোগাযোগের রাস্তা কলকাতার খালে ভেসে যাবে। আর এলজিইডি কতৃপক্ষ বলছে খালের গতি আটকে জোয়ার বৃদ্ধির কারণে খালের দুইধারেরই পাকা রাস্তা ভাঙনের কবলে পড়েছে।
সাতক্ষীরার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী মো: রাজিউল্লাহ বলেন, স্থানীয় খালের গতি আটকানোর কারণে এই দুর্দশা সৃষ্টি হয়েছে। এলজিইডি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছে। উপজেলা এলডিইডিকে বিষয়টি দেখে করণীয় নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
কদমখালী গ্রামের তাসলিমা খাতুন জানান, রাস্তাটি ভাঙলে শুধু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা থাকবে তা নয়, কলকাতার খালে প্লাবিত হবে শত শত ঘরবাড়ি, ভেসে যাবে ফসলি জমি, মাছের ঘের সবকিছু।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সালাহউদ্দিন বলেন, আড়াআড়ি বাঁধ দেয়ার ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করাও হচ্ছে।
কদমখালী গ্রামের অমর কৃষ্ণ বাছাড় বলেন, রাস্তাটি রক্ষায় এখনই ব্যাবস্থা গ্রহণ না করলে বড় বিপদ আসন্ন। পরে সংস্কার করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
শশাডাঙ্গা আরিফা খাতুন বলেন, যে কোন মুহুর্তে খাল কলকাতার জোয়ারের তোড়ে ভেঙে যেতে পারে পাকা রাস্তা। আর এই রাস্তাটাই এলাকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের রক্ষাকবচ। ভাঙলেই তলিয়ে যাবে কমপক্ষে ১২টি গ্রাম। রাত পোহালে ঈদ অথচ তাদের আনন্দ নেই খুশীর এই সময়ে তাদের সময় যাচ্ছে চোখের পানি আর আতংকিত অবস্থাতে।
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘটনাটি তিনি অবহিত হয়েছেন, দ্রুতই কার্যকর সমাধানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্রুত যাতে সমাধান হয় তার জন্য তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
প্রসঙ্গত, উপজেলা সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। যারমধ্যে আড়াই কিলোমিটার আজ ভাঙনের কবলে। এই মুহুর্তে যথাযথ সংস্কার করা না হলে তিন উপজেলার যোগাযোগ যে কোন মুহর্তে বিচ্ছিন্ন হতে পারে। আর ভেঙে গেলে দশ সহ¯্রাধিক মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
দেবহাটায় আড়াই কি.মি. রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে কলকাতার খালে

Leave a comment