বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। এছাড়া আইএমএফ-এর ঋণচুক্তির আলোকে সংস্কার কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন করা, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনাও বড় চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থনীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এটি ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের প্রতিটি দেশ বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে সৃষ্ট সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বৈশ্বিক প্রভাবে পণ্যের দাম বেড়েছে, বৈশ্বিক চাহিদায় মন্থরতা বিরাজ করছে, মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে-এসব বিষয় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলছে। এ কারণে গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
কৃষ্ণা শ্রীনিবাসনের কথায় উঠে এসেছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা সংস্থাটির আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এসব কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমেই স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে বলেই মত দেন তিনি।
আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি, উচ্চমূল্যের ডলারে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়ায় বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট অদূর ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। এ কারণে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে দ্রুত শেষ করতে হবে, যাতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে না যায়। পাশাপাশি নতুন চুক্তি করার ক্ষেত্রে সার্বিক অর্থনীতি বিবেচনায় নিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে বা এলসির মাধ্যমে টাকা পাচার বন্ধেও জোর দিতে হবে। বৈদেশিক রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডি বন্ধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। রিজার্ভের কথা বিবেচনায় নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় বন্ধেও নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। পাশাপাশি খাদ্যপণ্য আমদানি কমাতে দেশের ভেতরে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় সরকারকে অবশ্যই সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। আইএমএফ-এর শর্ত মানতে গিয়ে জনগণের জীবনযাত্রায় যাতে বিরূপ প্রভাব না পড়ে, সেদিকে সরকার দৃষ্টি দেবে-এটাই প্রত্যাশা।