
জন্মভূমি ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন শহরে পানি সংকটের পেছনে ধনীদের সুইমিং পুল, বাগানে পানি সেচ, গাড়ি ধোয়াসহ বিলাসী জীবনযাপন দায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এ তথ্য উঠে এসেছে। শহরের পানি সংকট মোকাবিলার জন্য গবেষকেরা নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনেরও আহ্বান জানিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রবন্ধটি নেচারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি পানি সংকটে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী শহর কেপটাউন। গবেষকেরা কেপটাউনের বাসিন্দারের পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করে তাদের পানির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করেছেন। গবেষকেরা বলেছেন, কেপটাউনের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন অভিজাত শ্রেণির এবং ১২ দশমিক ৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির। অথচ এই তিন শ্রেণির মানুষ সমগ্র কেপটাউনের অর্ধেকেরও বেশি পানি (৫১ শতাংশ) ব্যবহার করেন। অন্যদিকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করেন ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। তারা ব্যবহার করেন কেপটাউন শহরের মাত্র ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ পানি। গবেষকেরা আরও বলেছেন, এ ধরনের ভারসাম্যহীনতা ভবিষ্যতে গুরুতর পরিণতি ডেক আনবে। ধনীরা মূলত অভ্যন্তরীণ পানি সংকটের জন্য রীতিমতো হুমকি হয়ে উঠছেন। গবেষণাটি থেকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, বিশ্বের বিভিন্ন শহরের পানি সংকটের পেছনে অভিজাতরা দায়ী এবং তাদের কারণে বিশ্বের জনবহুল শহরগুলোতে পানির সংকট আরও বাড়বে। সন্দেহ নেই, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও তারা দায়ী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটির এলিসা সাভেলির নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধটির সহলেখক ছিলেন যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি বিশেষজ্ঞ হান্না ক্লোক। হান্না ক্লোক বলেছেন, ‘আমরা গবেষণায় দেখিয়েছি যে সামাজিক বৈষম্যের কারণে দরিদ্র মানুষেরা প্রয়োজনীয় পানীয়জল পায় না। ধনী-গরিবের বৈষম্য যত বাড়বে পানি সংকটের পরিমাণও তত বাড়তে থাকবে।’ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের অন্তত ৮০টি শহর তীব্র পানি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। হান্না বলেন, আমরা যদি শহরের পানির সুষম বণ্টন না করি, তাহলে ভবিষ্যতে সবাইকেই গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এদিকে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২০ সালে বিশ্বের অন্তত ২০০ কোটি মানুষ পানীয়জলের সুবিধা পায়নি।