হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল : নড়াইলের খাসিয়াল গ্রামে অর্ধশত বাড়ি ঘর ভাংচুর,লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে গ্রাম্য কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে।
বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাসী তান্ডবে তছরছ হয়েছে খাসিয়াল গ্রামের অনেকগুলি পরিবার। তাদের সাজানো-গোছানো ঘর-সংসার, বসতভিটা বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে সোমবার (৩৬০ সেপ্টেম্বর) খাশিয়াল গ্রামে গিয়ে দেখা যায় খাশিয়াল উত্তরপাড়া পুরুষ শূন্য. মহিলারা আতংকিত। তান্ডব আর ধ্বংসের চিহ্ন বিরাজ করছে চারপাশে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বসতঘর, দোকান, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, কোন কিছুই বাদ যায়নি। চারদিকে শুধ ধ্বংসযজ্ঞ। ঘরের টিনেরচালা, বেড়া, কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। খাট-পালং, শোকেজ, আলনা, ফ্রিজ, চেয়ার-টেবিল, বাক্স আলমারি ঘরের কোন জিনিষপত্র অক্ষত নেই।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ তান্ডব চালানো হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া তান্ডবে বাড়িঘর, সংসার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই। মহিলা ও শিশুদের চোখেমুখে আতংক। কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানাধীন খাশিয়াল গ্রামের হানিফ শেখ, ওহাব শেখ পক্ষের সঙ্গে জাফর মোল্লা পক্ষের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জেরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাফর মোল্লা তার প্রতিপক্ষ হানিফ শেখ পক্ষের হামলার শিকার হন। এর প্রতিশোধ নিতে জাফর মোলার সমর্থকরা ২৭ সেপ্টেম্বর হানিফ শেখের ছেলে মিলনকে কুপিয়ে আহত করে।
অভিযোগ রয়েছে এর জেরে হানিফ ও ওহাব শেখ পক্ষের লোকজন শনিবার হামলা চালায় জাফর মোল্লার পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে। ঘন্টাব্যাপি এ হামলায় হানিফ শেখদের পক্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের ৪/৫শ লোক অংশ নেয়। এ সময় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ১৬টি ঘরবাড়ি। বাড়ি বাড়ি চড়াও হয়ে যথা সর্বস্ব লুটে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এ বর্বরতার বিচার চেয়েছেন।
হামলা অগ্নিসংযোগের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত হানিফ শেখ পক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে হানিফ শেখের ছেলে চুন্নু শেখ এ হামলা ভাংচুরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে বলেন, জাফর মোল্লার লোকজনের হামলার শিকার তার ভাই মিলনের চিকিৎসা নিয়ে তারা ব্যস্ত রয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিলন বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে আওয়ামীপন্থী জাফর মোল্লারা তার উপর হামলা চালিয়েছে। এর জেরে এলাকার ছাত্র-জনতা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বলেন, খাশিয়াল গ্রামের বিবাদমান দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ইতোপূর্বে ৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।