জন্মভূমি ডেস্ক : হরতাল-অবরোধে পেট্রোল বোমা দিয়ে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে রাজধানীর পেট্রোল পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে এই পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীতে কোনো নাশকতাকারী বা যানবাহনে পেট্রোল বোমা দেওয়া ব্যক্তিদের হাতেনাতে ধরে তথ্য প্রমাণসহ পুলিশকে দিলে নগদ ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে এক দফার দাবিতে আন্দোলন করে আসা বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দেয়। এতে সারাদেশ থেকে দলটির লাখো নেতাকর্মী নয়াপল্টনে জড়ো হন। তবে মহাসমাবেশের শুরুর দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত এবং অনেকে আহত হন। এক যুবদল নেতাও মারা যান। পরে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে নয়াপল্টনের দখল নেয়।
পুলিশি অভিযানের মুখে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ায় পরদিন ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। হরতাল পালন শেষে এক দিনের বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর সারাদেশে টানা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। সেই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর আবারও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি, যা গতকাল ভোর থেকে শুরু হয়ে চলবে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত।
বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধে সারাদেশে অনেক গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর ফলে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
অবরোধে পেট্রোল বোমা দিয়ে যারা নাশকতা করছে তাদের ধরিয়ে দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ (ঢাকা) শহরে অনেক মানুষের বসবাস। কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিছু ঘটনায় পুলিশ শনাক্ত করেছে এবং গ্রেফতার করেছে। হাতেনাতে অনেককে ধরার ঘটনাও আছে। যারা হাতেনাতে ধরিয়ে দিচ্ছে তাদের জন্য আমরা পুরস্কারের ব্যবস্থা করছি। কেউ যদি নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারে, আমরা তাকে আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করব। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারী বা নাশকতাকারীদের কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে আমরা তাদের ২০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেব। হাতেনাতে ধরে তথ্য-প্রমাণসহ আমাদের কাছে তুলে দিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেব।’
অনেকে খোলা পেট্রোল বিক্রি করছে বিষয়টি অবগত করলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কেউ যদি খোলা পেট্রোল বিক্রি করে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন ব্যবস্থা নেব। আর যদি কেউ চুপ করে বিক্রি করে, অবশ্যই পরবর্তীতে বিষয়টি জানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেকে খোলা পেট্রোল বিক্রি করেন ড্রামে করে সেটা আজকে থেকে বন্ধ হয়ে গেল। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যারা এমন খোলা পেট্রোল বিক্রি করছেন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, পুলিশ দিনরাত কাজ করছে। প্রতিটি পেট্রোল পাম্পে একবার করে হলেও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে খোঁজখবর নেন। সারা ঢাকায় পুলিশ দৃশ্যমান। সিভিল পোশাকে ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।