জন্মভূমি ডেস্ক : নির্বাচনে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী কয়দিন মাঠে থাকবে সে নিয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এটা এখনও ঠিক হয়নি। প্রয়োজন হলে থাকবে। আমরা যদি বুঝি লাগবে তাদের কল করব, তারা আসবে। এই হলো কথা।’
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
পুলিশ কাদের আপনাদের না সরকারের এমন প্রশ্নে ইসি রাশেদা বলেন, ‘এখন যেহেতু আমাদের কাছে ন্যস্ত হয়েছে সেহেতু আমাদের নিয়ন্ত্রণে তারা আছেন, থাকবেন। যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে তার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আইনে যে সমস্ত ব্যবস্থা আছে, আমরা সেগুলো করবো।’
বিরোধী দলের আস্থা নেই এমন প্রশ্নে রাশেদা বলেন, ‘আমরা যদি এখন প্রত্যেকটা মানুষের ওপর আস্থাহীনতায় থাকি, তাহলে তো দেশটায় নাই। প্রশ্ন তো এরকমই দাঁড়ায় যে আমার কোথাও আস্থা নাই। তাহলে তো দেশটাই নাই। আসলে তো তা না দেশটা তো আছে। মানুষতো আছে। ঠিক এভাবেই কাউকে না কাউকে তো কাজ করতেই হবে। যেই করবে তাকে যদি আমি আস্থায় না নেই, তাহলে তো মুশকিল। আস্থায় তো নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ পর্যন্ত আমরা যতো ইলেকশন করেছি ওখানে কিন্তু আমরা তাদের থেকে অসহযোগিতামূলক আচরণ পাইনি। দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা আলাদা।’
আপনারা কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন এমন প্রশ্নে রাশেদা বলেন, ‘আসলে কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। যদি আক্ষরিক অর্থে আমরা ধরি, তাহলে নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। কিন্তু আমাদের প্রাণান্ত চেষ্টা থাকবে। আমাদের শতভাগের ওপরে যদি আরও কয়েক শতাংশ দিতে হয় শ্রম, আমরা সবই দিব। আমার চাইব, চাচ্ছি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা সেভাবে তৈরি করতে। কেউ এলেও না, না এলেও না। যারা আসছেন তারাও তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা চায়।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সবাই আসছে না এটা এক ধরনের শূন্যতা বলেন বা হতাশা বলেন, যাই বলেন; আমাদের এই সময়ের মধ্যে যদি না আসে, তাহলে আর জায়গা দেওয়া সুযোগ নেই। আমরা কিন্তু আসলে চাই নির্বাচনে সবাই আসুক। আসেননি এর মানে এই নয় যে, তারা আসতে চাইলে আমরা সেটা নিষেধ করব। কিন্তু, এই মুহূর্তে যে দুই দলের মধ্যে সংকট নিরসনে বসা, সেই সুযোগ আমাদের সাংবিধানিকভাবে নেই, আইনে কোনো সুযোগ নেই।’
সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘যারা এখন অনিয়ম করছেন তারা আদৌ প্রার্থী হবেন কি না, এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। ওনারা বলছেন, ওনারা করছেন, বললেই কাজে লেগে যাবে আমি কিন্তু তা মনে করছি না। তবে, বড় ধরনের অনিয়ম হলে আমরা অবশ্যই সেটা দেখব। না দেখার কোনো কারণ নেই।’
নির্বাচনের সময় বাড়ানোর যে ক্ষমতা আপনাদের হাতে আছে সে অনুযায়ী আপনারা কত তারিখ পর্যন্ত যেতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। কারণ এ বিষয়ে আমরা বসিও নাই। আলোচনাও করি নাই। পরবর্তীতে ভোটে যদি কেউ আসতে চায় তাহলে? এমন জবাবে ইসি রাশেদা বলেন, ‘অবশ্যই, আসতে চাইলে আমরা স্পেস দিব। এর মধ্যে কোনো ভুল নেই।’
বিষয়টা কেমন হবে এমন প্রশ্নে রাশেদা বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না। আশার ধরন দেখে বোঝা যাবে তারা কবে আসতে চায়, কখন আসতে চায়, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। তারা যদি আমাদের তফসিলের ঘোষণার টাইমের মধ্যেই কভার করে, তাহলে তো আমাদের ওদিকে হাত দেওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়ে না।’
মনোনয়ন জমা দেওয়া তারিখ কেন এতো দীর্ঘ করা হলো সেই প্রশ্নে ইসি রাশেদা বলেন, ‘এটা নিয়ে কিন্তু আপনারা চিন্তা নিতে পারেন। আসলে আমাদের ইচ্ছাটা কি। আসলে আমাদের সদিচ্ছাটা কোথায়। আমরা কিন্তু আসলে চাই, সবাই আসুক। এই স্পেসটা যদি ওনারা কাজে লাগান। আমাদের সময়ের মধ্যে না আসলে আর জায়গা দেওয়ার সুযোগ নেই। ওনারা যদি আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, ফরমালি আমাদের জানান তাহলে অন্য কথা। তারা যদি টোটালি না আসেন আমাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাহলে আমাদের আর পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।’
আমাদের অলরেডি নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। ওখান থেকে সরে আসার আমাদের আর সুযোগ নেই। যদি কেউ সদিচ্ছা দেখায়, ফরমালি সদিচ্ছা দেখাতে হবে। আমাদের কাছে যখন জানাবে আমরা ভোটে আসব, তখনকার কথা আলাদা।’