
সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর: সাতক্ষীরা কুশখালী সীমান্তে আটক ১৮বাংলাদেশিকে ভারতের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা কুশখালী সীমান্তে আটক ১৪ বাংলাদেশিকে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের পর ফেরত।
শনিবার (২১ জুন) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিএসএফের আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর বিকাশ কুমার এবং সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়নের অধিনস্থ কুশখালী বিজিবি বিওপির মধ্যস্থতায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়।
এর আগে আমুদিয়া চেকপোস্ট দিয়ে যাওয়ার সময় বিএসএফ তাদের আটক করে।
ওই বাংলাদেশিরা হলেন: ঢাকার কামরাঙ্গীর চর উপজেলার মাদ্রাসার গলি গ্রামের বাবু মিয়ার মেয়ে মারিয়া আক্তার (৩৭) ও সেলিম মিয়ার মেয়ে নুসরাত জাহান (১৭), ঢাকার মিরপুরের সিরাজের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫), সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামের বিমল কৃষ্ণ মণ্ডলের মেয়ে রানী মণ্ডল (৩৭), দেবাশীষ মণ্ডলের নয় বছরের মেয়ে রিয়া মণ্ডল ও কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে জাকির হোসেন (৪২), একই উপজেলার নলতা গ্রামের নুর আলীর ছেলে এনছাফুল ইসলাম (৪০)।
এছাড়া আরও রয়েছেন: খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার নাকসা গ্রামের মৃত আমির গাজীর মেয়ে নাছিমা বিবি (৩২) ও একই গ্রামের রেজাউল সরদারের চার বছরের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন ও ১১ বছরের মেয়ে রোকাইয়া, খুলনা সদরের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে তাসলিমা বেগম (৪২), আব্দুর রবের মেয়ে ইয়াসমিন, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বরাব গ্রামের রহমত আলীর মেয়ে সাথী আক্তার (৩১) ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার তালতলা গ্রামের হারাধন রায়ের ছেলে মনিতোষ রায় (৩১)।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক জানান, ওই ১৪ জনকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। আগামীকাল তাদের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই করে স্ব স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পতাকা বৈঠকে চারজনকে বাংলাদেশে পাঠালো বিএসএফ
এদিকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর চারজনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। গত ২১ জুন শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শ্যামনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী কৈখালীর কালিন্দি নদীর শুন্যরেখায় বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে ঐ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মোহাম্মদ নুর আলম (৩৬) তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন (২৬), দুই কন্যা লাবিবা খাতুন (৬ বছর) ও লামিয়া (১৬ মাস)কে বিজিবি প্রতিনিধি নায়েক সুবেদার তোফায়ের আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারটি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দাবি পাসপোর্টে ভারতে যাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য দীর্ঘসময় ধরে সেখানে অবস্থানের কারনে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়।
বিজিবি নায়েক সুবেদার মোঃ তোফায়েল আহমেদ জানান বিএসএফ চার বাংলাদেশীকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে রাত আটটার দিকে একই পরিবারের চার সদস্যকে শ্যামনগর থানা পুলিশের কাছ হস্তান্তর করা হয়।
ফিরে আসা মোহাম্মদ নুর আলম জানান চিকিৎসার জন্য তারা আড়াই বছর আগে ভারতে গিয়েছিল। তবে সেখানে অবস্থান করে চিকিৎসার পরামর্শ থাকায় ভিসার মেয়াদ শেষেও তারা ফিরতে পারেনি। একপর্যায়ে গত চারদিন পুর্বে তাদের কেরালা থেকে আটক করা হয়। শনিবার সীমান্তে এনে বিএসএফ এর মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হলেও কোন ধরনের দুর্ব্যবহার করা হয়নি।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান পরিবারের সদস্যদের ফেরত পাঠানোর খবরে আগে থেকে তাদের স্বজনরা থানায় অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে বিজিবি একই পরিবারের চার সদস্যকে হস্তান্তরের পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাদেরকে পরিবারের হাতে উঠিয়ে দেয়া হয়।