শাহরিয়ার কবির, পাইকগাছা : বাংলাদেশর প্রত্যন্ত অঞ্চল খুলনার পাইকগাছায় বাঁশের সাঁকো যেনো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। উপজেলার লতা ও দেলুটী ইউনিয়নের সংযোগস্থলে অবস্থিত লতা ও দেলুটী খেয়াঘাট, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম এ সাঁকো।স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, রোগী ও দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ঘাট দিয়ে পারাপার হয়। কিন্তু পূর্ব পাড়ে পাকা ঘাট থাকলেও পশ্চিম পাড়ে রয়েছে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো।এই সাঁকো বিপজ্জনক ও মৃত্যুফাঁদে প্রতিদিন পা রাখছেন কমলমতি শিক্ষার্থী সহ হাজারো মানুষ।প্রত্যন্ত এ অঞ্চলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। দু’চোখ যতদূর যাই শুধু পানি আর পানি।এ অঞ্চলে লবণ পানি হওয়ায় বিশুদ্ধ পানির জন্য এই সাঁকো পার হয়ে দূরদূরান্ত থেকে বাড়ির মহিলারা খাওয়ার পানি নিয়ে আসে।পূর্ব পাড়ে দেলুটি ইউনিয়নের একটি পুকুর থেকে প্রতিদিন বিকেলে শত শত নারী কলসে করে খাওয়ার পানি নিয়ে এই সাঁকো পারাপার হয়।
ঘাটের মাঝি দিলিপ কুমার জানান, গত এক বছর আগেও সাঁকোটির অস্তিত্ব ছিল না। কাদার মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হতো, যা বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল কষ্টকর। তিনি আরো জানান, নিজ অর্থায়নে বাঁশের সাঁকো তৈরি করলেও এখনো পর্যন্ত এর সংস্কারে কোনো সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একটু অসাবধানতাই হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ।আবার হতে পারে সেটা সারাজীবনের কান্না।
বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী তৃষ্ণা মণ্ডল বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যেতে ভয় লাগে। অনেকবার কাদা-পানিতে পড়ে বই-খাতা ও পরনের পোশাক নষ্ট হয়েছে। এখানে একটি স্থায়ী পাকা ঘাট অতীব জরুরী।
স্থানীয় গৃহিণী যমুনা সরকার বলেন,সকালে ছেলে-মেয়েরা যখন স্কুলে যায়, তখন খুব দুশ্চিন্তা হয়। পানির কলস নিয়ে সাঁকো পার হওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ। বাধ্য হয়ে হাঁটু কাদায় চলাচল করতে হয়।একই অভিযোগ কৃষক সৌমেন দাশের। তিনি বলেন, হাটে মালামাল নিতে গেলে বাঁশের সাঁকো পার হওয়া যায় না।পণ্য মাথায় তুলে কাদার মধ্য দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।
দেলুটী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ জানান, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। তিনি আরো জানান দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাকাঘাট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হবে।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, ঘাটের দুরাবস্থা ও জনসাধারনের দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।