পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : পাইকগাছা-কয়রায় চৈত্রের প্রথম সপ্তাহেই টানা দু-তিন দিনের বৃষ্টির সাথে শিলাবৃষ্টিতে তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাঁর আর্থিক মূল্য কোটি টাকার উর্ধ্বে। এতে চরম ক্ষতিমূখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী দু’উপজেলার তরমুজ চাষিরা। অক্লান্ত পরিশ্রমে তিল তিল করে তৈরি করা ক্ষেতে হঠাৎ শিলা বৃষ্টিতে চাষীরা হতাশাগ্রস্থ। স্বপ্ন বুননের প্রারম্ভে এ ক্ষতি ছিল চিন্তার বাইরে।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতবার তরমুজ চাষ হয়েছিল ১৫শ’ হেক্টর। চলতি বছর তরমুজ চাষে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে প্রায় ১৭শ’ হেক্টরেরও জমিতে।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতবার ৬শ’ হেক্টর জমির চাষের বিপরীতে চলতি মৌসুমে
উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের ১২শ’ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করা হয়। তবে শিলা বৃষ্টি তে ২শ’ হেক্টর জমির তরমুজ নষ্ট হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় শুরুতেই আগাম জাতের তরমুজের বীজতলা ভাল হওয়ায় ফলন ভাল হয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে অধিক লাভের আশায় তরমুজ চাষীরা আশাবাদী ছিল এবারও ভাল ফলন হবে কিন্তু আমবষ্যার কারণে ২/৩ দিনের টানা বৃষ্টি ও শিলা বৃদ্ধিতে তরমুজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিস সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, তরমুজের আগাম চাষিরা বিশেষ করে কয়রার চার্ন্নিররচক, হাতিয়ার ডাঙ্গা, চন্ডিপুর, কিনুকাটি এলাকাসহ পাইকগাছার দেলুটিসহ কানাখালী,পাতড়াবুনিয়া, কুমখালীর আংশিক এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। শিলা বৃষ্টিপাতে তরমুজের আগাম গুটি ঝরেগেছে। ঝড়ো হাওয়ায় গাছগুলো উলোট-পালট ও তছনছ হয়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টির পর কড়া রৌদ্রের তাপমাত্রায় তরমুজ গাছ শুকিয়ে যাওয়ার চাষিরা আরোও হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে গাছের যৌবন ফিরে পেতে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তরমুজ গাছে ছত্রাক নাশক কীটনাশক স্প্রের কথা বলে অফিস বা স্ব স্ব ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কানাখালী বাসিন্দা তরমুজ চাষি বিজয় রায়, শিবানী সরদার, পাতড়াবুনিয়া বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ইয়াসিন আলী ও রাজ্জাক সরদার বলেন, শিলা বৃষ্টিতে তরমুজের গুটি ঝরে গেছে। গাছের গড়ায় জল জমে রৌদ্রে গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। চড়া দামের বীজও সার, জল সেচ ও ক্ষেত পরিচর্যায় ধর দেনা ও এনজিও ঋণ নিয়ে স্বপ্নের তরমুজ ক্ষেতের বেহাল দেখে চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এখনো যথেষ্ট সময় আছে ক্ষেত পরিচর্যার। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কৃষক কাটিয়ে উঠতে পারবে।