শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ ৫ জেলের এক মাসেও কোন সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জেলে পল্লীর নিখোঁজ জেলেদের বাড়িতে এখনও চলছে শোকের মাতম। নিখোঁজ জেলেরা হলেন-উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ছোট মাছুয়া গ্রামের হাফেজ আকনের ছেলে বাহাদুর আকন, একই গ্রামের উজ্জত আলীর ছেলে এমাদুল আকন, আকবর শাহ’র ছেলে আল আমিন শাহ, মোসলেম হাওলাদারের ছেলে সালাম হাওলাদার ও পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর জুনিয়া গ্রামের মোখলেস হাওলাদারের ছেলে ওই ট্রলারের বাবুর্চি আব্দুর রহমান। ‘এফবি ভাই-ভাই’ নামের ট্রলারের মালিক নজরুল ইসলাম মাঝি বলেন, গত ২৬ জুন বিকেলে উপজেলার তুষখালী বাজার থেকে ১২ জন জেলে নিয়ে ট্রলারটি মাছ ধরার জন্য বঙ্গোপসাগরে উদ্দেশে যান এবং ৩০ জুন রোববার রাতে মাছ ধরা শেষে তীরে আসায় সময় রাত সোয়া ১১ টার দিকে হঠাৎ ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের কচিখালী এলাকায় ডুবে যায়। এতে ট্রলারে থাকা ১২ জেলে সাগরের পানিতে ডুবে যান। পরে অপর একটি মাছ ধরার ট্রলারের লোকজন সাত জেলেকে উদ্ধার করে পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। বাকি পাঁচ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া ৭ জেলে ২রা জুলাই (মঙ্গলবার) বিকেলে ছোট মাছুয়ার গ্রামের বাড়িতে আসেন। এসময় স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। উদ্ধার হওয়া জেলে মোশারেফ শাহ বলেন, ১ জুলাই সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আমাদের সাত জেলেকে নিয়ে উদ্ধারকারী ট্রলারটি মহিপুর পৌঁছায়। ট্রলার ডুবির পর আমরা প্রায় চার ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরে ভেসে ছিলাম। দীর্ঘ সময়ে ভেসে থাকায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’ নিখোঁজ জেলে বাহাদুর আকনের বড় ভাই সোহেল আকন বলেন, ‘জানি না আমার ভাই বাহাদুর বেঁচে আছে কি না। আমাদের বাড়িতে এখনও কান্নাকাটি চলছে।’এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ জেলেদের বৃদ্ধ পিতা-মাতা সহ স্ত্রী ও সন্তানরা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছলিম জানান, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারা জীবত আছেন না কি মারা গেছেন তা বলাও মুশকিল। কারণ অনেক সময় ট্রলার ডুবির ঘটনায় জেলেরা সাগরে ভাসতে ভাসতে ইন্ডিয়ার ভিতরে চলে যান। পরে সেখান থেকে আবার বাড়িতে ফিরে আসে। তবে এবারের ট্রলার ডুবিতে জেলেরা কোন অবস্থায় আছেন একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ওই জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। আমরা কোষ্টগার্ড ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, আমরা নিখোঁজ জেলের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছি।