
জন্মভূমি ডেস্ক : বর্তমানে এক বছর পর প্রকাশ হয় দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তথ্য। তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বছরে চারবার জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে ত্রৈমাসিক জিডিপি আগামী জুন মাসে প্রকাশ করা হবে।
বুধবার রাজধানীর বিবিএস মিলনায়তনে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান। ওয়ার্কশপের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
বিবিএস জানায়, নতুন ভিত্তি বছরের জিডিপি প্রাক্কলনের জন্য বিবিএস দেশের অর্থনীতির ১৯টি খাতের মূল্য সংযোজন প্রাক্কলন করে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যায়ে বিবিএস বার্ষিক জিডিপি প্রাক্কলনের পাশাপাশি ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিবিএস আইএমএফের কারিগরি সহায়তায় আন্তর্জাতিক দিকনির্দেশনা মেনে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ের ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের কাজ শেষ করেছে।
ত্রৈমাসিক জিডিপি অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণের একটি স্বল্পমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিবিএস ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা থেকে সেকেন্ডারি ডাটা ব্যবহার করছে। ফলে স্পষ্টত ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের সঙ্গে অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার যথেষ্ট সম্পৃক্ততা রয়েছে।
বিদ্যমান পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৫-১৬ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রাক্কলিত ত্রৈমাসিক জিডিপি চলতি বছরের জুন মাস থেকে প্রকাশ করা হবে। আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী, কোনো কোয়ার্টার অতিক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া, ত্রৈমাসিক জিডিপি একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে পরবর্তীতে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান বলেন, দেরিতে হলেও আমরা ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশ করতে যাচ্ছি। বিশ্বের অনেক দেশ এটা করছে। ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশ করতে গিয়ে প্রথমে একটু কম দেখাবে, এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আপনারা দেখবেন প্রথম কোয়ার্টারে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সামান্য বাস্তবায়ন হয়, বছর শেষে কিন্তু এটা ৯০ শতাংশের বেশি হয়। ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশ করতে গেলেও একই হতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ৬৮ শতাংশ বা ১৩৭টি দেশ ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশ করে। আমরা আইএমএফের চাপে এগুলো করছি না, সরকারের পরামর্শেই ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি বের করতে যাচ্ছি।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, ৫০ বছরে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। বর্তমানে বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রকাশ করা হয়, তবে আমাদের কারেন্ট তথ্য দরকার। এ কারণে বছরের পরিবর্তে তিন মাস পর পর জিডিপি তথ্য প্রকাশ করা হবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ) রেহানা পারভীন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (ট্যাকসেস লিগ্যাল অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) আহাম্মদ উল্যাহ প্রমুখ।