সিরাজুল ইসলাম (শ্যামনগর) সাতক্ষীরা : সুন্দরবনে মৎস্যজীবী উপকূল-বাসী ও সুশীল সমাজের মানুষের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিবেশ জলবায়ু ও বন উপদেষ্টার কাছে ১০ দাবি।বনজীবী উপকূলীয় বাসীর অভিমত দাবি গুলো বাস্তবায়ন হলে অতি শীঘ্রই সুন্দরবনের সব দুর্নীতি অনিয়ম সহ সব সমস্যা সমাধান হবে।
(১)সুন্দরবনে কর্মরত ৪৫ টহল ফাঁড়ি ১৬ স্টেশনে চারটি রেঞ্জ দুটি বিভাগের কর্মরত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জরুরি ভিত্তিতে অপসরণ করে তাদের চাকরিচ্যুত থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলে দীর্ঘদিনের ঘুষ বাণিজ্য দুর্নীতি অনিয়ম সবকিছুর তথ্য উদঘাটন করা সহজ হবে। চিহ্নিত হবে সুন্দরবনের বনরক্ষীদের অপরাধের ধরন। উদঘাটন হবে দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট করা বন কর্মকর্তাদের নামও বিস্তারিত তথ্য।
(২) সর্বপ্রথম প্রত্যাহার করতে হবে ঘুষ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন সাংবাদিক সিরাজুল ইসলামকে হত্যার চেষ্টার নির্দেশ দাতা ও সাংবাদিক সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ঘরে ডাকাতি লুটপাট করার নির্দেশ দাতা সিপিজির সদস্যদের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করা ৩৪ টাকার বি এল সি তে ১২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা গ্রহণ করা জেলেদের সুন্দরবনে এক সপ্তাহ ২৫০ টাকা সরকারি রাজস্ব স্থলে ১২০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা চট্টগ্রামের দুর্নীতিবাজ সন্তান সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ কে এম ইকবল হোসেন চৌধুরী ও তার একান্ত সহযোগী কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তাহলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
(৩) সুন্দরবনের প্রতিটি স্টেশন বা রাজস্ব আদায়ের অফিসগুলোতে কোন দালাল প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না দালালদের নাম লিখে প্রতি স্টেশনে চাট টানাতে হবে দালালদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে সকল তথ্য বের করতে হবে তারা যেন চিরতরে বন বিভাগের রাজস্ব অফিসে আর না ঢুকতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। দালালদের ও সম্পদের হিসাব নিতে হবে কারণ দালালরাও কুলি থেকে কোটিপতি হওয়ার তথ্য রয়েছে।
(৪) প্রতিটি স্টেশন অথবা রাজস্ব আদায় অফিসগুলোতে প্রতিটি সরকারি সুবিধা দেওয়ার সরকারি রাজস্ব চাট টানাতে হবে এবং সুন্দরবনে প্রবেশে জেলে বাওয়ালি থেকে শুরু করে পর্যটক পর্যন্ত কোনটার কত টাকা ফ্রি তা চাটে বিস্তারিত উল্লেখ থাকতে হবে ।চাটে উল্লেখিত টাকার এক টাকা অতিরিক্ত ফ্রি নিতে পারবে না কোন বন কর্মকর্তা ও বনরক্ষী।
(৫) জেলেরা পারমিট বা পাস নিয়ে সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া আহারণ করে ফিরে এসে পাস সমর্পণ করার পর তাদের সিটি পাস অথবা পাস সমর্পণ করতে কত টাকা বন্ বিভাগ নিলো তার রশিদ দিতে হবে ।এজন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন মন্ত্রণালয় থেকে সুন্দরবনের প্রতি রাজস্ব আদায় অফিসে চিঠি দিতে হবে।
(৬) প্রতিটি বন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিতে হবে শুধু বন কর্মকর্তা নহে হিসাব নিতে হবে বন কর্মকর্তাদের স্ত্রী সন্তান ও স্বজনদের তাহলে বন কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের দুর্নীতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন দুর্নীতি প্রতিরোধ বিশ্লেষক ব্যারিস্টার হোসনেয়ারা শামীম। তিনি আরো বলেন দালালদের প্রতিরোধ করে যার পাস তার কাছে তার হাতে দিতে হবে যার পাশ তিনি সই বা সমর্পণ করতে আসবে তাহলে বনজীবী কর্তৃক সুন্দরবনের অপরাধের হার জিরোতে নেমে আসবে। ব্যারিস্টার হোসনেয়ারা শামীমের মতে যে ব্যক্তি সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া ও মধু আহরণ করতে যাবে তিনি অফিসে আসলে বা প্রদানে ও সমর্পণে তাকে বন বিভাগ অবহিত করবে এবং বুঝায়ে বলবে সুন্দরবনের কোন অপরাধের কি শাস্তি কোন অপরাধে বি এল সি বাতিল করে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না ।মামলা দেওয়া হবে ইত্যাদি তাদের বুজপাট দিয়ে সুন্দরবনের অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।
(৭) সুন্দরবনের নামকরণ করে সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রণালয় করতে হবে। সুন্দরবনের সেপারেট নীতিমালা তৈরি করতে হবে। ব্রিটিশের আইন পরিবর্তন করে বা সম্পূর্ণ বাতিল করে নতুন আইন তৈরি করতে হবে। এ বিষয়ে বনজীবী ও সুধী সমাজ বলেন বাঘ হত্যার শাস্তি ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড, হরিণ শিকারের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অন্যান্য প্রাণী শিকারের শাস্তি, ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড, সুন্দরবনের পশুর কাঠ পাচার কারীদের শাস্তি ৬ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড বিধান রেখে আইন তৈরি করতে হবে, অন্যান্য কাঠ-পাচারকারীদের ৪থেকে ৭বছর কারাদণ্ডের বিধান করতে হবে। বিনা পাশে বা বিনা অনুমতিতে সুন্দরবনে পরিবেশ কারীদের ৩ থেকে ৪ বছর কারাদণ্ডের আইন করতে হবে। সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার কারীদের যাবজ্জীবন শাস্তির বিধান রাখতে হবে ।এবং এসব অপরাধের ধারা না জামিন যোগ্য করতে হবে। সুন্দরবন এলাকার লোকালয়ে সুন্দরবনের যে সমস্ত বন বেড়ে উঠেছে তাহা বন বিভাগের আওতায় ফিরিয়ে দিয়ে আইন তৈরি করতে হবে। তাহলে সুন্দরবনের অপরাধ কমিয়ে আসবে অভিমত উপকূলীয় সুধী মহলের। সুন্দরবনে খেওলা জালের পাশ দিয়ে তার পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে ঘাইজাল আর এই ঘাইজালে যারা মাছ শিকার করে তারা সবাই বিষ প্রয়োগের সাথে জড়িত। যার কারণে বিশ্বের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ বিলুপ্তির পথে। কারণ বিষ দিয়ে মাছ শিকার করলে শুধু চিংড়ি মাছ নহে যাবতীয় প্রজাতির মাছ বিনষ্ট হয়ে যায় জরুরী ভিত্তিতে এই অবৈধ ঘাইজাল সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। সেজন্য বন মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। কারণ সুন্দরবনের বিষ প্রয়োগের সাথে ১৬ টি স্টেশন ৪৫টি টহল ফাঁড়ি ৪টি রেঞ্জ দুটি বিভাগ প্রত্যক্ষভাবে অবৈধ অর্থের বিনিময় জড়িত রয়েছে এর মধ্যে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সরকারি বন সংরক্ষক কে এম ইকবল হোসেন ও তার সহযোগী কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রথম সারিতে।
(৮) সুন্দরবনে অভয়ারণ্য প্রবেশে বনরক্ষীরা অবৈধ টাকার বিনিময় অবাধে মাছ শিকার করে
করাচ্ছেন। এটাও সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ বিলুপ্তির একটি বড় কারণ এজন্য বন মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
(৯) উপকূলীয় মানুষের অভিযোগ সুন্দরবনের নীতিমালা সংশোধন বা নতুন নীতিমালা তৈরিতে অপরাধের ধরন অনুযায়ী দায়ী বন কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্যও আইন তৈরি করতে হবে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুত ও অপরাধের ধরন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা।১লে জুন থেকে ৩ মাস সুন্দরবনে মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে প্রবেশ অধিকার সম্পূর্ণ বন্ধ কিন্তু হয় তার ব্যতিক্রম। বন কর্মকর্তারা অবৈধ টাকার বিনিময় অবাধে জেলেদের মাছ কাঁকড়া আহারণ করায়। এ বছর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক কে এম ইকবল হোসেন করেছেন কোটি টাকার বাণিজ্য। যখনই সিসি এফ, সিএফ, ডি এফ ও প্রোগ্রাম করে সুন্দরবনে তার আগেই দালালদের মাধ্যমে বনজীবীদের খবর দিয়ে খালের ভিতরে থাকতে বলা হয়। এজন্য বন মন্ত্রণালয় থেকে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।
(১০) প্রতিবছর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হিসেবে কাঁকড়ার পাস পারমিট বন্ধ থাকে। কিন্তু একটা নৌকা এ সময় ঘাটে বসে থাকে না। প্রতি নৌকা এক সপ্তাহে দুজনের কাছ থেকে ২০০০ টাকা বন কর্মকর্তাদের দিয়ে সুন্দরবনে অবাধে কাঁকড়া আহারণ চলে। এ বছর এখান থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইকবল হোসেন চৌধুরী সে কারণে সুন্দরবনে কাঁকড়া সম্পদ ও বিলুপ্তির পথে। নীতিমালায় আসে ছোট কাঁকড়া ধরা যাবে না কিন্তু বন বিভাগ অবৈধ টাকা নিয়ে সব কিছু জায়েজ করে দিচ্ছে। এভাবেই বন কর্মকর্তারা সুন্দরবন ও সুন্দরবনের প্রাণিসম্পদ মৎস্য সম্পদ কাকড়া সহ সব সম্পদ ধবংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে সুধী মহল।