এইচএম আখতারুজ্জামান, বরিশাল : বরিশালের বিভিন্ন নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরার অপরাধে ৬১ জেলেকে কারাদন্ড এবং ১০৪ জেলেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গতকয়েকদিনে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন প্রতিনিয়ত মা ইলিশ রক্ষার্থে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তুু একশ্রেনী অসাধু মৎস্য শিকারীদের তান্ডবে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। বরিশালের বিভিন্ন এলাকার জেলে ও ব্যবসায়ীরা জানান, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট জেরা ও উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে দক্ষিনাঞ্চলের উপকূলের নদ-নদীতে অভিযান পরিচালা করলেও অসাধু জেলেদের নির্বৃত্ত করা যাচ্ছে না। তাঁরা দিনে ও রাতে বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ শিকার অব্যাহত রেখেছেন। এই জেলেদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের বখাটে যুবকরা। জানাযায়, নিষেধাজ্ঞা মৌসুমে অবৈধ ভাবে ইলিশ মাছ শিকারের জন্য একশ্রেনী মৌসুমী জেলের আর্বিভাব ঘটে। তারা স্থানীয় রারনৈতিক দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় অবাধে মাছ শিকার করছেন। বিশেষ করে বরিশালের হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দীগঞ্জ এই তিন উপজেলা কেন্দ্র করে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী ও এর শাখা নদ-নদী ঘিরে ওঠা দেশের সবচেয়ে বড় ইলিশ অভয়াশ্রমে এই চক্র বেশি সক্রিয়। এই চক্র নিয়ন্ত্রিত হয়, হিজলা উপজেলার জানপুর মাছঘাট এলাকা থেকে। এই এলাকায় প্রশাসন গত শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে। ইউএনও, মৎস্য অফিসারসহ ৫ জন আহত হলে, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তর জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রশাসন দিন-রাত কাজ করছে। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞার আট দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই আট দিনে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীতে অভিযান চালিয়ে ৬১ জেলেকে মৎস্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা সংশোধিত আইন-১৯৮৫ এর আওতায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১০৪ জন জেলেকে তিন থেকে পাচঁ হাজার করে টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসময় বরিশাল বিভাগে ১১৭ বার বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, ৯০৭ বার বিভিন্ন মাছঘাট, ১ হাজার ৬৮০ বার বিভিন্ন আড়ৎ ও ৯৬০ বার বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। সর্ব শেষে গত দুই দিনের অভিযানে ৪ হাজার ২৭০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের ১৬ লাখ ৪৩ হাজার৪০০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌকা ও মাছ ধরার উপকরনাদি জব্দ করা হয়েছে। এসব নিামে বিক্রি করে ১ লাখ ২ হাজার ৬০০ টাকা আয় করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য উপকূলের সাত হাজার বর্গ কিলোমিটারের মূল প্রজনন স্থলসহ সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরন, পরিবহন ও বিপনন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।