জন্মভূমি ডেস্ক : বাগেরহাটের ফকিরহাটের বেতাগা ও পিলজংগ ইউনিয়নের অনাবাদি ও জলাবদ্ধ জমিতে ডালি পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফল হয়েছে কৃষি বিভাগ। প্রাথমিকভাবে পিলজংগ ইউনিয়নের ৪৫ শতক জলাবদ্ধ জমিতে ৪০টি ও বেতাগা ইউনিয়নের ৫৫ শতক জমিতে ৪৫টি ডালি স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জলাবদ্ধ ও পতিত এক একর জমিতে ডালি পদ্ধতিতে লতানো সবজি চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ফকিরহাটের বেতাগা ও পিলজংগে প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ঘের, পুকুর ও জলাবদ্ধ জমিতে ঝুলন্ত ডালিতে সবজি চাষ শুরু করা হয়। সেখানে চাষ করা হচ্ছে করলা, মিষ্টি কুমড়া, শসা ও মরিচ। এসব জমিতে সবজি চাষে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা পিলজংগ ইউনিয়নের বেয়ারা পাড়া গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন মসদী বলেন, ‘এই সময় সাধারণত আমার জমিতে পানি থাকে। তাই কোনো ফসল হয় না। কিন্তু এবার ফসল হচ্ছে। তাই আমি খুব আনন্দিত।’ ‘আমার জমিতে ২৪টি ডালি স্থাপন করেছি। সেখানে করলা, কুমড়া ও লাউ লাগিয়েছি। করলা ও কুমড়ায় ফুল এসেছে। অনেক পরিশ্রমের পর ফসল আসায় খুব ভালো লাগছে’, যোগ করেন তিনি। বেতাগা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মণ্ডল জানান, দুই হাত চওড়া ও দুই হাত লম্বা বাঁশের ফ্রেম তৈরি করা হয় এবং চার কোনায় বাঁশ পুতে ফ্রেম লাগানো হয়। এর উপর নেট ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর ভেতরে পলিথিন দিয়ে ছিদ্র করে দেওয়া হয়। এর ওপর দেওয়া হয় তিন ভাগের দুই ভাগ জৈব সার ও এক ভাগ মাটি। তারপর পলিব্যাগ বা টবে চারা তৈরি করে সেখানে লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে চারাগুলো মাচায় উঠে যায়। ‘বেতাগার মাছকাটা এলাকায় ৪৫টি ডালি স্থাপন করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি’, বলেন তিনি। পিলজংগ ব্লকের উপসহকারী কর্মকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, ‘একবার এই ডালি তৈরি করে নিতে পারলে জলাবদ্ধ জমিতে তা দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় ও সেখান থেকে সবজি পাওয়া যায়। আমাদের এই পদ্ধতি সফলতা দেখাচ্ছে।’ ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফকিরহাটের পিলজংগ ও বেতাগা ইউনিয়নে পুকুরসহ জলাবদ্ধ জমিতে আমরা সবজি চাষে সফল হয়েছি। এই ডালি পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনের জন্য আমরা কৃষকদের প্রযুক্তিগতসহ সব ধরনের সহায়তা করছি।’